পরোয়ানাভুক্ত রাবির ১৬ শিক্ষার্থীর জামিন

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরোয়ানাভুক্ত শিক্ষার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বর্ধিত ফি ও বাণিজ্যিক সান্ধ্যকোর্সবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলায় ১৬ শিক্ষার্থীকে জামিন দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আখতারুল ইসলামের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন ১৬ জন শিক্ষার্থী। বিচারক মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন। আগামী ৭ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মুন্না সাহা বলেন, ‘২৫ জনের মধ্যে ১৬ শিক্ষার্থী আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক সবার জামিন মঞ্জুর করেন। অন্য শিক্ষার্থীরা আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তাঁদের জামিন মঞ্জুর হয়নি।’

জামিন পাওয়া পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক উৎসব মোসাদ্দেক, রাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মুইজ, সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব রকি ও ফারুক ইমন, রাবি ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি প্রদীপ মার্ডি ও সুমন অগাস্টিল সরেন, রাবি ছাত্র ফ্রন্টের সাবেক আহ্বায়ক মো. আলমগীর হোসেন, রাবি ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি খাদেমুল বাশার, আবু সুফিয়ান বকসী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্র মশিউর রহমান সজল, মার্কেটিং বিভাগের সাবেক ছাত্র মো. সাজু আহমেদ, ফোকলোর বিভাগের সাবেক সাহাবুদ্দিন, ইলিয়াস খান, আসাদুজ্জামান আসাদ ও ইকবাল কবির।

এর আগে গত ৭ মে আদালতে ৪৩ শিক্ষার্থীকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবদুল হান্নান। ২৯ মে আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের বর্ধিত ফি ও সান্ধ্যকালীন কোর্স বাতিলের দাবিতে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে আন্দোলন শুরু করে কয়েকটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন। আন্দোলন চলাকালে ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগ-পুলিশ অতর্কিত হামলা করে। এতে অর্ধশত শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। হামলার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন, অ্যাকাডেমিক ভবন ও আবাসিক হলে ভাঙচুর চালান। ঘটনার পরের দিন নগরীর মতিহার থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ ও ছাত্রলীগ পৃথকভাবে দুটি করে মোট ছয়টি মামলা করে। যেখানে ১০৫ জনের নাম উল্লেখ্যসহ ৪৭৫ জনকে আসামি করা হয়।

পরে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ফের আন্দোলনের হুমকি দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার বসে মামলাগুলো প্রত্যাহারের আশ্বাস দেয়। পরে ছাত্রলীগ তাদের দুটি মামলা তুলে নিলেও পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা প্রত্যাহার করেনি। পুলিশ বাদী হয়ে করা ‘নাশকতা, সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা’ দেওয়ার মামলায় প্রায় সাড়ে তিন বছর পর চলতি বছরের ৭ মে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা মামলা দুটি বর্তমানে নিষ্ক্রিয় আছে।