উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে উত্তাল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

Looks like you've blocked notifications!
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, দুর্নীতির বিচার ও তাঁর অপসারণের দাবিতে বুধবার শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মানববন্ধন। ছবি : এনটিভি

দুর্নীতি, নিয়োগে বাণিজ্য, শিক্ষক লাঞ্ছনা, সন্ত্রাসে মদদ দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে উপাচার্যের বিচার ও তাঁর অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে সপ্তাহজুড়ে উত্তাল রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)।

আজ বুধবার শিক্ষকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। পরে আন্দোলনকারীদের একটি মিছিল উপাচার্যের বাসভবন পর্যন্ত যায়। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামের এক জোটের নেতৃত্বে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। 

এদিকে আন্দোলনের মুখে চারদিন ধরে নিজ কার্যালয়ে আসছেন না উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, উপাচার্য যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে তাঁর বন্ধুর মেয়েকে ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়ে অনিয়মের চূড়ান্ত রূপ দিয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে ইংরেজি  বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর (বর্তমানে প্রভাষক) পরীক্ষার খাতায় নম্বর বাড়িয়ে দিতে শিক্ষকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে হীন মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। 

এ ছাড়া মানববন্ধনে বক্তারা দাবি করেন, উপাচার্য নিয়োগে আত্মীয়করণের মাধ্যমে অনিয়মের নজির স্থাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে উপাচার্য নিজে দুর্নীতি করেছেন বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। এ সময় উপাচার্যের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিচার দাবি করে তাঁর গ্রেপ্তার দাবি করেন আন্দোলনকারীরা। 

মানববন্ধনে কর্মচারী পরিষদের নেতারা অভিযোগ করেন, উপাচার্য অন্যায়ভাবে কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে রেখে অত্যাচার করেছেন। পদোন্নতির কথা বলায় উপাচার্য বিভিন্ন সময় তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও হুমকি দেন।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানের উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু তাহের, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন, ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ মুক্ত জোটের মুখপাত্র এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর সিদ্দিকী, শিক্ষক সমিতির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান এবং পরিবহন চালক ইউনিয়নের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম প্রমুখ। 

সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর বাসভবনের কর্মচারী জানান, উপাচার্য বিশ্রামে আছেন।

উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে বাণিজ্য, আত্মীয়করণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ করে উপাচার্যের বিচার ও অপসারণসহ মোট ১৪ দফা দাবিতে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষকরা। গত সোমবার উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা।