নাশতা দিতে দেরি, ক্যান্টিনবয়কে পেটালেন ছাত্রলীগকর্মী

Looks like you've blocked notifications!
মীর মশাররফ হোসেন হল। ফাইল ছবি

নাশতা দিতে তিন-চার মিনিট দেরি হওয়ায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলের এক ক্যান্টিনবয়কে পেটালেন এক ছাত্রলীগকর্মী। আজ শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের বি ব্লকের ক্যান্টিনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগকর্মী দেবাশীষ মিত্র ক্যান্টিন মালিককে মারধর করেন বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ক্যান্টিনে নাশতা করতে যান মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র ও ছাত্রলীগকর্মী দেবাশীষ মিত্র। নাশতা করার একপর্যায়ে অতিরিক্ত রুটি আনতে বলেন ক্যান্টিনবয় ইয়াসিনকে (১৫)। রুটি আনতে তিন-চার মিনিট দেরি করে সে। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ইয়াসিনকে মারতে শুরু করেন দেবাশিষ।

‘ভাই, ভুল হয়ে গেছে। সরি ভাই, এখনি দিচ্ছি’- বলে মাফ চাওয়ার পরও মারধর বন্ধ করেননি ছাত্রলীগকর্মী। একপর্যায়ে ইয়াসিনকে বাঁচাতে ক্যান্টিন মালিক মোহাম্মদ মামুন এগিয়ে গেলে তাঁকেও এলোপাতাড়ি থাপ্পড় মারতে শুরু করেন দেবাশিষ। এ সময় ক্যান্টিনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে দেবাশীষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ ব্যাপারে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কোনো মন্তব্য বা কথা বলতে রাজি হননি ক্যান্টিন মালিক মোহাম্মদ মামুন।  

ছাত্রলীগকর্মী দেবাশীষ মিত্র এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভাইয়া, আসলে হইছে কি, ওই ক্যান্টিনবয়কে আমি হালকা একটা থাপ্পড় দিয়েছি। এ ছাড়া পরে ক্যান্টিনের মালিকের সঙ্গে কথা বলেছি, ঝামেলা মিটে গেছে। আসলে নতুন ক্যান্টিন তো ওরা কিছু বোঝে না।’  

হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসফিক সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ঘটনা শুনেছি এবং খোঁজ নিয়ে জানলাম যে, এটা আসলে তেমন কিছুই না। একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল। পরে ঠিক হয়ে গেছে।’

মারধরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ওবাইদুর রহমান বলেন, ‘আজকে শোক দিবসে ঢাকায় যাওয়ায় সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। পরে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই ব্যাপারটা জেনেছি। এ ছাড়া আমি নিজেও খোঁজ নিয়েছি এবং নিচ্ছি। ওই ছেলেকে (দেবাশীষ) আমি ডাকব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে তাঁর বিচার হবে। ন্যায়বিচার করা হবে ইনশাল্লাহ।’

মীর মশাররফ হোসেন হলে ক্যান্টিন মালিক বা দোকানিকে মারধরের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল হলের দোকান মালিক হালিমকে লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪১তম ব্যাচের ছাত্র তাপস চন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে, গত বছরের মে মাসে প্লাস্টিকের প্লেটে খাবার পাঠানোয় ক্যান্টিন মালিক কামাল হোসেনকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল হোসেন দিপু।

যদিও এসব ঘটনার পর ছাত্রলীগের রোষানলে পড়ার ভয়ে এবং নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি হামলার শিকার কেউ।

তবে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ওবাইদুর রহমান দাবি করেন, নিকট অতীতে হলে কর্মরত কাউকে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।