ঢাবির দুই হলের ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া
এক ছাত্রকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মো. হারুন নামে এক ছাত্র আহত হয়েছেন। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, টিভি অ্যান্ড ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্র হারুন দুপুরে বিজয় একাত্তর হলের কেন্টিনে খেতে যান। এ সময় হলের গেটে তিন ছাত্রলীগকর্মী হারুনের পরিচয় জানতে চান। এতে হারুন নিজেকে জিয়া হলের ছাত্র বলে পরিচয় দেন। তখন ওই তিন ছাত্রলীগ নেতারা আইডি কার্ড দেখাতে বলেন।
হারুন তখন জানান, আইডি কার্ড হলে রেখে এসেছেন। কিন্তু ছাত্রলীগ নেতারা তা বিশ্বাস করেননি। একপর্যায়ে হারুন নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের কর্মী বলে পরিচয়ও দেন। তার পরই হলের গেট আটকিয়ে তিন ছাত্রলীগ নেতা হারুনকে মারধর করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেন।
এর কিছু পরই বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ ইনান ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসাইন এসে হারুনকে মারধর করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে অবস্থানরত বন্ধুরা খবর পেয়ে হারুনকে উদ্ধার করতে আসে। এ সময় বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে বিজয় একাত্তরের ছাত্রদের ধাওয়া দেয় এবং পাল্টা ইট নিক্ষেপ করে।
এ সময় হারুনের কাছ থেকে মোবাইল ও সাড়ে চার হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় বলে হারুনের বন্ধুরা অভিযোগ করেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. এম আমজাদ আলী, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স এসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়ে যান।
এ ব্যাপারে বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ ইনান বলেন, ‘জিয়া হলের এক ছেলে এসে আমাদের হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারি করে। পরে আমি গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করি।’ তবে হারুনকে মারধরের কথা অস্বীকার করেন ছাত্রলীগ নেতা।
বিজয় একাত্তর হলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জিয়া হলের এক ছেলে বিজয় একাত্তর হল থেকে ফাও খেয়ে চলে যাচ্ছিল। পরে ইসলামিক স্টাডিজ তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগ তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং আইডি কার্ড চেক করে। সে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্র জেনে তার ওপর চড়াও হয়। খবর পেয়ে আমি গিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছি।’ হারুনকে মারধরের বিষয়টি হল শাখা সভাপতির মতোই অস্বীকার করেন সাধারণ সম্পাদক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, হারুন নামের হলের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে মারামারি হয়। পরে বিষয়টি মীমাংসা হয়। ওর মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়া হয়েছে। মানিব্যাগে এত বেশি টাকা ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. এম আমজাদ আলী জানান, বিজয় একাত্তর ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার নিয়ে মারামারি হয়েছে। পরে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। হলের সিসি ক্যামেরা দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।