‘আমার বাবা জমি বিক্রি করে পড়াশোনা করায়’

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : এনটিভি

এমনিতেই দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের অনেক বেশি অর্থের বিনিময়ে লেখাপড়া করতে হয়। তার ওপর শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে অনেক শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার দ্বার বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার ও গতকাল বুধবার এই দাবিতে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ও চট্টগ্রামে আন্দোলন করেছেন দেশের প্রায় ১০০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও প্রকৌশল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এ সময় এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সরকার পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে স্টুডেন্টদের ভ্যাট দিয়ে লেখাপড়া করায়। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি থেকে ঢাকা পর্যন্ত বাসভাড়া সেই ২৫ বছর ধরে এক টাকা। আমরা তো ভর্তুকি দিয়ে পড়াশোনা করি না। আমরা আমাদের নিজেদের টাকায় পড়ি। আমার বাবা জমি বিক্রি করে পড়াশোনা করায়।’

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেশের সব শিক্ষার্থীর স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেককে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে হয় বলে জানান এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সবাইকে জায়গা দিতে পারছে না। বাধ্য হয়ে আমরা এখানে আসছি। এখানে এমনিতেই টিউশন ফি ম্যানেজ করতে আমাদের প্রবলেম হয়ে যাচ্ছে সেইখানে আবার সাড়ে ৭ পারসেন্ট ভ্যাট আরোপ করছে। এখানে অনেক স্টুডেন্ট আছে যারা নিজের খরচে টিউশন ফি দেয়। এই যে এক্সট্রা সাড়ে সাত পারসেন্ট ভ্যাট তাদের তো এডুকেশনে অনেক প্রবলেম হবে।’

ভ্যাট প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘আমরা আজ রাজপথে নেমেছি শুধুমাত্র ৭.৫ পারসেন্ট ভ্যাট ওঠানোর জন্য। যতদিন না পর্যন্ত ভ্যাট না ওঠানো হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাব।’

এ সময় শিক্ষা কি বাজারের পণ্য না কি, এমন প্রশ্ন রাখেন অনেক শিক্ষার্থী। একজন বলেন, ‘যেখানে আমাদের মতো একটা মিডল ক্লাস ফ্যামিলির প্রাইভেটের টিউশন ফি দিতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে আবার ৭.৫ পারসেন্ট ভ্যাট। শিক্ষা কি কোনো পণ্য? বাজারের কোনো পণ্য না কি, যে ভ্যাট দেব আমরা।’

এ সময় টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন রাখেন, ‘আন্দোলন করতে গিয়ে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন গুলি খাবে? আমরা কি বাংলাদেশের শিক্ষার্থী না?’