প্রজ্ঞাপনের আগ পর্যন্ত কোটা আন্দোলন চালানোর ঘোষণা

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি : এনটিভি

কমিটির সুপারিশকে ইতিবাচক উল্লেখ করে কোটা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা। আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে কেন্দ্রীয় কমিটি।

হাসান আল মামুন বলেন, আমরা কমিটির সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছি। তবে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

সরকার চাইলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগেও কোটা সংস্কার করতে পারে বলে মন্তব্য করেন হাসান আল মামুন।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক খান বলেন, ছাত্রসমাজ ফাইল চালাচালিতে আস্থা রাখতে পারছে না। তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। দাবি পূরণ হলে পড়ার টেবিলে ফিরব।

তিন দফা দাবিগুলো হলো- পাঁচ দফার ভিত্তিতে কোটার সংস্কার, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নামে মামলা প্রত্যাহার ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বিচার।

এ সময় আগামীকাল বেলা ১১টায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ফারুক।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা। বৈঠকের পর তাঁরা ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন। এরপর আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিলও করেন। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি না করায় আবারও মাঠে নামেন আন্দোলনকারীরা। গ্রেপ্তার হন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা।

এদিকে, আন্দোলনের মুখে সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর গত ৩ জুলাই সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। সেই কমিটি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির (নবম থেকে ১৩তম গ্রেড) সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা না রাখার সুপারিশ করেছে।

সেই কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম আজ দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে প্রবেশে কোনো কোটা পদ্ধতি না রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারি চাকরির ক্রমতালিকার নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটা পদ্ধতি থাকছে না। মুক্তিযোদ্ধা কোটাও না রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ তৈরি করার আগে আমরা সংশ্লিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছি। আইন বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে, কোটা রাখা বা না রাখা এটা সরকারের পলিসির ব্যাপার। মুক্তিযোদ্ধা কোটা না রাখলে এ-সংক্রান্ত উচ্চ আদালতে যে রায় হয়েছে, তা লঙ্ঘন হবে না।’

এটি কবে নাগাদ বাস্তবায়িত হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছি। এখন প্রধানমন্ত্রী অনুমোদনের পর সেটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলে এটি কার্যকর।’