মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ ঢাবি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে
দুই পথচারীকে আটকের পর মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
পরে ছাত্রলীগ জানায়, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ওই দুই পথচারীকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ নেতাকেও পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের রেডিওলজি বিভাগের শিক্ষানবিশ টেকনিশিয়ান সাইফুদ্দিন সিফাত ও ‘স্বপ্ন’ সুপারশপের বিপণনকর্মী রিয়াজুল ইসলাম।
অন্যদিকে, ছাত্রলীগের যে নেতাককর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁরা হলেন ঢাবির শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আখতারুজ্জামান (তৃতীয় বর্ষ, পালি অ্যান্ড বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগ) ও একই হলের ছাত্রলীগ কর্মী রাজিউর রহমান (তৃতীয় বর্ষ, সংগীত বিভাগ)।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, রাতে তাঁরা শহীদ মিনার এলাকায় দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। তখন সাত থেকে আটজন এসে ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে তাদের ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। সেখান থেকে জহুরুল হক হলের একটি কক্ষে নিয়ে তাদের আটকে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের গ্রামের বাড়িতে (পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা) ফোন দিয়ে তাদের পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে রাত পৌনে ১২টার দিকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপে উদ্ধার করে টিএসসিতে আনা হয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
রাতে সাইফুদ্দিন সিফাতের বাবা মো. নেসার উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সিফাতের নাম্বার থেকে একজন ফোন করে বলে আপনার ছেলে ছাত্রদল করে। এক লাখ টাকা পাঠান। তা না হলে তাদের মারধর করে থানায় দেওয়া হবে। তাদের নামে মামলা হবে। এ সময় ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কথা বলা ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে সে বলে, আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।’
ঘটনার ব্যাপারে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। আমরা তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দিয়েছি। সেইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
একই কথা বলেন ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই ) সাহেব আলী বলেন, ‘তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে তাদের নাম্বার সংগ্রহ করে ধরার চেষ্টা করা হলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। এখন তাদের ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।’