জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, তিন পুলিশ প্রত্যাহার

Looks like you've blocked notifications!
আজ বুধবার পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার ও তাঁতীবাজার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি : এনটিভি

পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তুলে আজ বুধবার পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার ও তাঁতীবাজার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভের মুখে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারি জোনের উপকমিশনার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

এই ঘটনা তদন্তে সহকারী উপকমিশনার (এডিসি) নুরুল আমিনকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া তিন পুলিশ সদস্য হলেন ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক  (এসআই) আবদুল আওয়াল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ইসলাম ও অপু।

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মহিদুল ইসলাম ও অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নিক্সন ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় গোয়ালঘাট লেনে ওয়ারী থানার এসআই আবদুল আওয়াল ও তাঁর দল তাদেরকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে নিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে ১২ জন শিক্ষার্থী তাদেরকে ছাড়িয়ে আনতে যান।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আটক শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনতে গেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। শিক্ষার্থীরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশ সদস্যরা তাঁদেরকেও আটক করেন। ওই সময় তাঁদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় বলেও অভিযোগ জানান শিক্ষার্থীরা।

এই ঘটনার  প্রতিবাদে আজ  সকাল থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবরোধ সৃষ্টি করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা রায়সাহেব বাজার ও তাঁতীবাজার এলাকাও অবরোধ করেন। আর তাতেই পুরান ঢাকার রাস্তায় যানজট দেখা দেয়।

প্রায় দেড় ঘণ্টা অবরোধ থাকার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাস ও হস্তক্ষেপে অবরোধ কর্মসূচি বন্ধ করে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।

অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ রাতে বিভিন্ন মেসে অভিযানে চালিয়ে নিরপরাধ ছাত্রদের আটক করছে এবং তাদেরকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে টাকা দাবি করছে। পুলিশের এমন হয়রানিমূলক অভিযান বন্ধ এবং পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আটক শিক্ষার্থীদের থানা থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। ওইসব শিক্ষার্থীরা আহত হওয়ায় তাঁদের আজ সকালে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে উচ্চতর চিকিৎসার জন্য কয়েকজনকে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, ‘সন্দেহভাজন এক শিক্ষার্থীকে ওয়ারী থানার পুলিশ আটক করে। তাঁকে অন্য শিক্ষার্থীরা ছাড়িয়ে আনতে গেলে পুলিশ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের আটক করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনা হয়েছে এবং তাদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

মোস্তফা কামাল আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশের ডিসির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে এবং যে সব পুলিশ সদস্য এ কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তির দাবি করেছি। ডিসি আমাদের আশ্বাস দিয়েছে খুব দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন। তারপরও আমরা স্বরাষ্ট্র  মন্ত্রণালয় বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করব।’