ছাত্রলীগের দাবি মেনে ডাকসুর বয়সসীমা প্রস্তাবনা

Looks like you've blocked notifications!

ছাত্রলীগের দাবি মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) বয়সসীমা নির্ধারণ করতে প্রস্তাবনা দিয়েছে গঠনতন্ত্র সংশোধন পরিমার্জন কমিটি। এই প্রস্তাবনায় যাঁরা স্নাতকোত্তর বা এমফিল করছেন, তাঁরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন। তবে শর্ত, ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা। তবে বিষয়টি আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত হবে। এ বৈঠকে প্রথমবারের মতো ডাকসু ও হল নির্বাচনের আচরণবিধিও চূড়ান্ত হবে।

এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি ‘পরিবেশ পরিষদের’ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছাত্রসংগঠনের নেতারা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।

সভায় ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা বয়সের বিষয়ে ৩০ বছরের মধ্যে যে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন বলে দাবি জানান। ওই সভায় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী দাবি জানান, যাঁরা দ্বিতীয়বারের মতো মাস্টার্স করছেন, তাঁরা ডাকসু ও হল সংসদের ফি দেন। তাঁদের ভোটার করতে বলেন।

এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী তাঁর দাবিকে সমর্থন জানিয়ে চাকরির বয়সের (৩০) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভোটার করার জন্য মত দেন। এ ছাড়া এর আগেও ছাত্রলীগ ২৯ বা ৩০ বছরের একটি বয়সসীমা করার দাবি জানিয়েছিল।

তাদের দাবিগুলো সিন্ডিকেট সভার আলোচনায় সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান।

এদিকে, বয়সসীমার বিষয়টি নিয়ে গঠনতন্ত্র প্রস্তাবনা কমিটি যে প্রস্তাব দিয়েছে, সে বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন মত দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, যারা নিয়মিত ছাত্র, শুধু তারাই ডাকসুর ভোটার হতে পারবেন।

নিয়মিত বলতে যাঁরা শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ছেন, তাঁদেরই বুঝিয়েছেন উপাচার্য। কিন্তু যাঁরা স্নাতকোত্তর ফলাফল পেয়েছেন, তাঁরা ভোটার হতে পারবেন না।

গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, ‘গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে, বিশেষভাবে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেছে। যারা ভোটার, তারাই প্রার্থী হতে পারবে। আমরা ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা অনার্স, মাস্টার্স ও এমফিলে অধ্যয়নরতদের কথা বলেছি। বয়সসীমা ৩০ করার প্রস্তাব করেছি। ভোটার ও প্রার্থীদের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। যদি কেউ একাধিক মাস্টার্স করে, তাঁরাও প্রার্থী ও ভোটার হতে পারবেন। পড়াশোনা হতে হবে ধারাবাহিক। পিএইচডিতে অধ্যয়নরতরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না। আবার যারা বিভিন্ন জায়গাতে চাকরি করে, তারাও ভোটার হতে পারবে না।’

সান্ধ্যকালীনে অধ্যয়নরতদের বিষয়ে অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা  বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা কথা বলিনি। সিন্ডিকেট চূড়ান্ত করবে। গঠনতন্ত্র নিয়ে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে মৌলিক পরিবর্তনের এখতিয়ার আমাদের নেই। শুধু সুপারিশ করেছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সিন্ডিকেট।’

একই সভায় হল সংসদের গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন পাঁচ সদস্যের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

অন্যদিকে, ভোটকেন্দ্র হলের পরিবর্তে একাডেমিক ভবনগুলোতে করা এবং ভোটকেন্দ্রগুলো সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার দাবি জানান বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। এ দুটি দাবির বিষয়ে অনড় ছাত্রদলসহ বাম সংগঠনের নেতারা। এসব দাবির জন্য তারা বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলন, বিবৃতি এবং বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। কিন্তু একমাত্র ছাত্রলীগ গঠনতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে হলে কেন্দ্র করার মত দেয়।

যদিও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অতীতের মতো ভোটকেন্দ্র হলগুলোতেই হবে বলে জানিয়েছেন প্রস্তাবনা কমিটির কয়েকজন সদস্য।