রোকেয়া হলের তিন ট্রাঙ্ক ব্যালটের ‘ব্যাখ্যা’ দিলেন প্রভোস্ট

Looks like you've blocked notifications!
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তিনদিন পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে রোকেয়া হল সংসদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে করলেন প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা। এনটিভির ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন সকালে রোকেয়া হলের ভেতরে একটি কক্ষে তিন ট্রাঙ্ক ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনাকে ‘সম্পূর্ণ মিস কনসেপশন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা।

প্রভোস্ট বলেন, ‘আমরা সেদিন গণমাধ্যমকর্মী ও প্রার্থীদের ব্যালট বাক্স দেখিয়েই নির্বাচন শুরু করেছিলাম। তাই এটা নিয়ে অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তিনদিন পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে রোকেয়া হল সংসদ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রভোস্ট। এ সময় সেখানে ছিলেন হাউজ টিউটর দিল আরা জাহান।

সংবাদ সম্মেলনে হল সংসদ নির্বাচনের আলোচিত তিনটি ট্রাঙ্কও হাজির করা হয়। প্রথমে ১১ মার্চের নির্বাচনের দিন রোকেয়া হলে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন রোকেয়া হলের হাউজ টিউটর দিল আরা জাহান। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন রোকেয়া হল প্রাভোস্ট ড. জিনাত হুদা।

১১ মার্চ সকাল ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬টি হলে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ছাত্রীদের কুয়েত মৈত্রী হল ও রোকেয়া হলে ভোটগ্রহণ শুরু করা যায়নি। পরে কুয়েত মৈত্রী হল থেকে বেশকিছু আগের রাতে সিলমারা ব্যালট পেপার উদ্ধার করে ছাত্রীরা। সেখানকার প্রভোস্টকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর সেখানে ভোট শুরু হয়।

রোকেয়া হলে ছাত্রীদের সামনে ছয়টি ব্যালট বাক্স খুলে দেখানো হয়। ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের হলে মোট নয়টি ব্যাক্স থাকার কথা। এখানে প্রায় এক ঘণ্টা পরে ভোট শুরু হয়। কিন্তু দুপুরের দিকে ছাত্রীরা দাবি করেন, বাকি ব্যালট পেপার সিলগালা করে হলের একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে শরগোল তৈরি হয়। একপর্যায়ে সেখানে ছাত্রলীগ, কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ স্বাতন্ত্র প্রার্থীরা যান। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হলের সেই কক্ষ থেকে তিনটি ট্রাঙ্কে ভরা ব্যালট পেপার বের করা হয় এবং তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেওয়া হয়।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে সেই তিনটি ট্রাঙ্কে ভরা ব্যালট পেপারের ব্যাপারে রোকেয়া হলের প্রভোস্ট জিনাত হুদা বলেন, ‘ব্যালট পেপারের বাক্সগুলো ভোটকেন্দ্রের বাইরে ছিল না। বাক্সগুলো যেখানে পাওয়া গিয়েছিল (অডিটরিয়ামে), সেটাও ভোটকেন্দ্রের অংশ। ভেতরের ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমরা সেগুলো ব্যবহারের জন্য সেখানে রেখেছিলাম।’

সেদিন ভোটগ্রহণ চলাকালে রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগনেতা মারজুকা রায়না বাদী হয়ে গত সোমবার মামলাটি করেন।

পরে মঙ্গলবার রাত থেকে চার দফা দাবিতে অনশনে বসেন রোকেয়া হলের পাঁচ ছাত্রী, তাদের মধ্যে চারজন প্রার্থী। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, ডাকসু ও হল সংসদে পুনর্নির্বাচন, হল প্রভোস্টের পদত্যাগ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলার ব্যাপারে ড. জিনাত হুদা বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়নি। আমি প্রভোস্ট হিসেবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করিনি। আমি মামলার কথা জেনেছি গণমাধ্যম থেকে।’

রোকেয়া হলের প্রভোস্ট আরো বলেন, ‘কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়নি। আমি অনশনকারীদের জানিয়েছি যে, পুরোনো নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেওয়ার এখতিয়ার কোনো প্রাধ্যক্ষের নেই।’