ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, তরুণের এক বছর সাজা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের (গ ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষায় প্রবেশপত্র নকল করে পরীক্ষায় দেওয়ার দায়ে এক তরুণকে এক বছর সাজা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সহযোগিতা করায় আরেক তরুণকে আটক করা হয়েছে। দুজনকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে পরীক্ষার আগের দিন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজার থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তিনজনকে আটক করে। তাঁদের কাছে প্রশ্নপত্র জালিয়াতির বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ আলী।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মেহেদী হাসান ও সঞ্জয় কুমার সাহা নামের দুই শিক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় লেকচার থিয়েটার ভবনের চতুর্থ তলায় পড়ে। এতে দুজনেরই ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের সিরিয়াল নম্বর ও রোল নম্বর একই রকম দেখা যায়। বিষয়টি পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষককের নজরে আসে। পরে ওই শিক্ষক পরীক্ষা শেষে তাঁদের প্রক্টরের হাতে তুলে দেন।
প্রক্টর তাঁদের সব নথিপত্র যাচাই-বাচাই করলে সঞ্জয়ের প্রবেশপত্র ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। প্রক্টর মেহেদীকে ছেড়ে দেন। তারপর সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তাঁর আরেক বন্ধু মেহেদীর (পরীক্ষার্থী নয়) মাধ্যমে তাঁর প্রবেশপত্র ডাউনলোড করেছেন বলে জানান। প্রক্টর ওই মেহেদীকে আসতে বলেন। মেহেদী প্রক্টরের কার্যালয়ে এলে তাঁকেও আটক করা হয়।
পরে ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ‘পাবলিক পরীক্ষাসমূহ আইন ১৯৮০’-এর ৩ (খ) ধারায় সঞ্জয়কে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ সময় তিনি বলেন, এ ধরনের প্রবেশপত্র বা কল্পিত নামে পরীক্ষায় অংশ নিলে মোবাইল কোর্ট আইনে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর ও সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। সঞ্জয়কে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আর মেহেদীর (পরীক্ষার্থী নয়) বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাঁদের দুজনকেই শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এ এম আমজাদ জানান, তিন তরুণের বাড়ি খুলনার একই এলাকায়। তারা তিনজনই বন্ধু। এর মধ্যে আটক মেহেদী এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে অনুত্তীর্ণ হয়েছে।
এদিকে পরীক্ষার আগের দিন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজার থেকে গোয়েন্দা পুলিশ জালিয়াত চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে। তাঁদের কাছে প্রশ্নপত্র জালিয়াতির বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর জানান, আটক তিনজনের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে তাঁকে সূর্য সেন হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
এ এম আমজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘একটা মহল ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভুয়া কিছু প্রশ্ন আপ করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্যই তৎপর। কিন্তু আমরা এদের আইডি গোয়েন্দাদের হাতে দিয়েছি এবং কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এ ধরনের জালিয়াতচক্রকে ধরতে আমরা সদা তৎপর আছি।’