জাবিতে ইবি খেলোয়াড়দের মারধর, হ্যান্ডবল টুর্নামেন্ট স্থগিত

Looks like you've blocked notifications!

বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যান্ডবল টুর্নামেন্টের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলা চলাকালে মারধরের ঘটনায় টুর্নামেন্টটি স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

এ তথ্য নিশ্চিত করে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মামুন মিয়া বলেন, ‘এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য শুধু হ্যান্ডবল টুর্নামেন্টটি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হলো। তবে অন্য সব খেলা যথা নিয়মেই চলবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

মামুন মিয়া আরো বলেন, ‘খেলার মাঠে ফাউলের ঘটনা ঘটে থাকে। তবে রেফারির সিদ্ধান্তের পরও মারামারি হওয়াটা দুঃখজনক। এর দায়ভার উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।’

বুধবার বিকেল ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শুরু হওয়া জাবি ও ইবির মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলার দ্বিতীয়ার্ধে ইবির এক খেলোয়াড়ের ফাউলের কারণে দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে মাঠে ঢুকে ইবি দলের খেলোয়াড়দের ওপর চড়াও হলে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ইবির দুজন শিক্ষক ও নয়জন খেলোয়াড়  আহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুরু থেকেই আক্রমণাত্মকভাবে খেলছিল উভয় দল। প্রথমার্ধের খেলায় ইবি দলের অধিনায়ক অাশিক খান জাবির এক খেলোয়াড়কে হাতের ইশারায় গুলি করার হুমকি দেন। দ্বিতীয়ার্ধের খেলার ১১ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডে জাবির খেলোয়াড় অন্তরকে ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে ফাউল করেন ইবি হ্যান্ডবল দলের অধিনায়ক আশিক খান। পরে রেফারি তাঁকে দুই মিনিট খেলা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত দেন। সে সময় দর্শকরা উত্তেজিত হয়ে মাঠে প্রবেশ করেন এবং ইবির খেলোয়াড়দের ওপর আক্রমণ করে। দর্শকদের থামাতে গিয়ে ইবির সাবেক প্রক্টর মাহবুবুর রহমান ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ড. সোহেল আহত হন। পরে আহতদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

জাবির এক খেলোয়াড় অভিযোগ করে বলেন, ইবির হ্যান্ডবল দলের অধিনায়ক আশিক খান খেলা চলার সময়ে জাবির হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড় মংকে গুলি করার হুমকি দেয়। এ ছাড়াও জাতীয় দলে খেলা জাবির হ্যান্ডবল দলের সদস্য আরাফকে হুমকি দিয়ে আশিক বলেন, ‘জাবির বাইরে যেখানেই খেলতে যাবি সেখানেই তোকে মেরে ফেলব।’

অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে আশিক খান বলেন, ‘মাঠে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। যে ফাউলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির সূত্রপাত হয়েছে তার জন্য রেফারি আমাকে শাস্তিও দিয়েছেন। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করে প্রথমে আমাকে ও পরবর্তীতে দলের অন্য খেলোয়াড়দের মারধর করে।’

ইবির সাবেক প্রক্টর মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘খেলার শুরু থেকেই জাবির দর্শকরা আমাদের খেলোয়াড়দের মানসিক চাপের মধ্যে রাখেন। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা চলাকালে হঠাৎ দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করে লাঠি ও স্টাম্প দিয়ে মারতে শুরু করেন। এতে আমাদের নয়জন খেলোয়াড় আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘আমরা লজ্জিত। লজ্জা প্রকাশ ও ক্ষমা চাওয়া ছাড়া এখন আর আমাদের কিছুই বলার নেই।’

ইবির শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ড. সোহেল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ছাড়াতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও মারধরের শিকার হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতো বর্বর হতে পারে জানতাম না।’

এ ছাড়াও এনটিভি অনলাইনের ইবি সংবাদদাতাকে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত বিচার দাবি করেছি। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়ের সব খেলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে কালোতালিকাভুক্ত করার দাবি জানিয়েছি।’