ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বাসশ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একটি বাস আটক করে চালক ও সহকারীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেটে বিআরটিসির একটি দোতলা বাস আটক করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই বাসের দুই কর্মচারীকে মারধর করে তারা। পরে আরেকটি বাস আটক করে তারা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে গিয়ে মধ্যস্থতা করে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাস দুটি ছেড়ে দেয়।
হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কল্যাণপুর থেকে বাসে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন আল-বেরুনী হলের দুই আবাসিক ছাত্র। বাসটি গাবতলী পার হওয়ার পর বাসের যাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের (৪৪তম ব্যাচ) ছাত্র তাইজুল দেখেন, তাঁর পকেটে থাকা মুঠোফোনটি নেই।
ওই সময় তিনি বাসের ভাড়া উত্তোলনকারী সোহেলকে সন্দেহ করেন। পরে সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বাসের চালক ও তাঁর সহকারী সাকিব তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় বলে অভিযোগ করেন তাইজুল।
পরে অন্যজনের মুঠোফোন দিয়ে তাইজুল হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঘটনাটি জানান। হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রান্তিক ফটকে গিয়ে গুলিস্তান থেকে ইপিজেডগামী বাসটি আটক করে। এ সময় তারা বাসের কর্মী সোহেল ও সাকিবকে মারধর করে।
এর পরই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মহব্বত আমিন শিশির ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। ছাত্রলীগ কর্মীরা এ সময় ইপিজেড থেকে ঢাকাগামী আরো একটি বাস আটক করে। তবে ওই বাসের কাউকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, হলের এক জুনিয়রের মোবাইল চুরির পরিপ্রেক্ষিতে ওই বাসের হেলপারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলে বাসের চালক ও হেলপার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। বাস আটকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহকারী প্রক্টর এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় জুনিয়ররা বাস দুটি ছেড়ে দেয়।
যোগাযোগ করা হলে গাবতলী বাস ডিপোর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নেতা মো. রিপন হোসেন বলেন, ‘বাসের স্টাফরা আমার সামনেই বসে আছে। তারা চুরি করেনি। তবু মারধর করা হয়েছে। ওই রুটে ছাত্ররা প্রায় স্টাফদের মারধর করে।’ তিনি আরো বলেন, বাস আটককারীরা বাসের চালক ও হেলপারের কাছ থেকে প্রায় ১১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেখ আদনান ফাহাদ বলেন, ‘আমি এবং আরেকজন সহকারী প্রক্টর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ওই বাসের ইজারাদারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এর পর ছাত্ররা বাস দুটি ছেড়ে দিয়েছে। আগামী রোববার সকালে ক্যাম্পাসে এসে তিনি (ইজারাদার) এ ব্যাপারে প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে বসবেন।’