বৈঠকে বসেছেন জাবির উপাচার্য, জটিল আবর্তে পরিস্থিতি

Looks like you've blocked notifications!
আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আজ বুধবার বিকেলে বৈঠকে বসেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। ছবি : এনটিভি

দেড় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পে ছাত্রলীগ নেতাদের  কোটি টাকার ভাগ-বাটোয়ারার বির্তকের মধ্যেই আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পূর্ব নির্ধারিত বৈঠকে বসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। বুধবার বিকেলে নতুন প্রশাসনিক ভবনে এই বৈঠক শুরু হয়।

জাবির উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত, মহাপরিকল্পনা পুনর্বিন্যাসসহ তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে দীর্ঘদিন ধরেই ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এর মধ্যে গতকাল ১২ সেপ্টেম্বর নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা শেষে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে অর্থের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় নেন উপাচার্য।

এর মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ৪ থেকে ৬ শতাংশ চাঁদা দাবি করেছিলেন – উপাচার্যের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উভয়কে সংগঠন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে জাবির উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা হয়ে না দাঁড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছিল বলে রাব্বানী উল্টো উপাচার্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়।

তবে এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে শোভন ও রাব্বানী গল্প ফেঁদেছে বলে প্রতিক্রিয়া জানান উপাচার্য ফারজানা ইসলাম।

এরই মধ্যে টাকা লেনদেন নিয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে রাব্বানীর একটি ফোনালাপ ফাঁস ও উপাচার্যের কাছ থেকে কোটি টাকা পাওয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমে সাদ্দাম স্বীকার করে নিলে আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়।

এর আগে টাকা পাওয়ার বিষয়ে স্বীকার করায় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলেও জানান সাদ্দাম। পাশাপাশি ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে শিক্ষক লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক রায়হান রাইন অভিযোগ করেন, তাদের আন্দোলনের কারণে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের মোবাইল ফোন সেবা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, জাবিতে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়েছে। দুটি কারণে এসব কাজ ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমত, ‘পূর্ণাঙ্গ মহাপরিকল্পনা’ ছাড়াই এসব উন্নয়নকাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে বলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অভিযোগ করেছে। দ্বিতীয়ত, উপাচার্য ফারজানা ইসলামের মধ্যস্থতায় ছাত্রলীগের নেতাদের বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধা দেওয়া সংক্রান্ত আরেকটি অভিযোগ। এ অভিযোগ প্রকাশের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ আন্দোলন করতে শুরু করলে নানা নাটকীয়তার দিকে মোড় নেয় আন্দোলন।