বুয়েটের ভিসির পদত্যাগসহ শিক্ষক সমিতির ৭ দফা

Looks like you've blocked notifications!
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বুয়েটের শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে এম মাসুদ। ছবি : সাইফুল সুমন

‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হওয়ায়’ বুয়েটের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের পদত্যাগ দাবি করেছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি।

আজ বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে এম মাসুদ। তিনি শিক্ষক সমিতির পক্ষে সাত দফা দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভিসির পদত্যাগ দাবি করছি। তিনি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন।’

এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘আমরা আশা করি তিনি তার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন এবং যদি তিনি পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা সরকারকে আহ্বান জানাব তাঁকে সরিয়ে দিতে।’

শিক্ষক সমিতির অন্য দাবিগুলো হলো-আবরারের হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা, আবরার হত্যা মামলার ব্যয় বুয়েট প্রশাসনের বহন করা, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, হত্যাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, অবৈধভাবে দখলে থাকা হলের আসন উদ্ধার করা এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

গতকাল বুধবার বুয়েটের শিক্ষক সমিতির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে এম মাসুদ ওই সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।

এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘ইতিপূর্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘদিনের নির্লিপ্ততা, নিষ্ক্রিয়তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আবাসিক হল সমূহে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উপাচার্য়ের ধারাবাহিকভাবে অবহেলা ও ব্যর্থতা আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডে উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষর্থীদের সাহস জুগিয়েছে বলে সভা মনে করে।’

এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘সভা সর্বসম্মতভাবে মনে করে যে, এসব ব্যর্থতার কারণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম উপাচার্য পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। এ অবস্থায় অনতিবিলম্বে বুয়েটের উপাচার্য পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য সভা অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলামের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করলে তাঁকে অবিলম্বে দায়িত্ব হতে অপসারণের জন্য বুয়েট শিক্ষক সমিতি সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছে।’

সে সময় একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে বুয়েট ব্যর্থ হওয়ায় বুয়েট শিক্ষক সমাজ আবরার ফাহাদের পরিবারসহ দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান। তখন এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘একটি নিরাপদ বুয়েট ক্যাম্পাস এবং বুয়েটের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বুয়েট মিক্ষক সমাজ দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে (২১) রোববার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বুয়েটের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. মাসুক এলাহী তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে আবরারকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে মারধর করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।