রাবির হলে অভিযান, ইমামসহ ১৪ জন আটক

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা ফজলুল হক হলে অভিযান চালিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে আজ শনিবার ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। ছবি : এনটিভি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা ফজলুল হক হলে অভিযান চালিয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে হল মসজিদের ইমামসহ ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, ক্যালেন্ডার, ডায়েরি, প্রচারপত্র, রিপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

আজ শনিবার বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত মতিহার থানা পুলিশ এ অভিযান চালায়।

আটকরা হলেন শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের মসজিদের পেশ ইমাম মো. সানাউল্লাহ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, চতুর্থ বর্ষের আব্দুল হক মানিক, শরিফুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের এমবিএর শিক্ষার্থী আনারুল হক, তৃতীয় বর্ষের মোস্তাক, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুস সবুর, দ্বিতীয় বর্ষের সাজিদ, ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফাহাদ আলম, দর্শন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবুল খায়ের, চতুর্থ বর্ষের ইউসুফ আলী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের সিরাজুল ইসলাম সুমন, লোকমান হোসেন সিরাজী এবং ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রায়হান হোসেন সুমন।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) উপকমিশনার আমির জাফর (পূর্ব) বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারি, বিভিন্ন সময়ে নাশকতা সৃষ্টিকারী শিবিরকর্মীরা হলে অবস্থান করছে। তা ছাড়া কয়েকদিনের মধ্যে তারা বৈঠকে বসবে বলেও খবর ছিল। তাই আজ দুপুর থেকে হলে নজরদারি বাড়ানো হয়। পরে দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় হলে অভিযান চালাই।

এ সময় মসজিদের ভেতর থেকে উগ্রবাদী বই, প্রচারপত্র, ক্যালেন্ডার, ডায়েরিসহ হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে সন্দেহভাজন ১৪ জনকে আটক করা হয়। আটকদের সম্পর্কে যদি কোনো ধরনের নাশকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলে তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা।

অভিযান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপার্চায অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘আমরা সকাল থেকেই এদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পেয়েছি। আমাদের কাছে তথ্য আসে আজকে যে কোনো সময়ে এই মসজিদে বিপুল পরিমাণে জিহাদি বই আসতে পারে। সে জন্য আমরা বিকেল ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি।’

উপ-উপাচার্য আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জঙ্গি কার্যক্রম সম্পর্কে সব সময় তৎপর রয়েছে। জঙ্গি কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো  কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী কিংবা শিক্ষককের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুজিবুল হক আজাদ খান বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী কিছু ব্যক্তি সংঘটিত হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ শেরেবাংলা হলে অভিযান চালিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও ছিল।

এ ছাড়া মসজিদে এত পরিমাণে উগ্রবাদী বই কীভাবে এলো সেটা জানতে মসজিদের ইমামকেও আটক করা হয়েছে বলে জানান প্রক্টর।

এদিকে এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাঞ্জু বলেন, ‘আমরা সব সময় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সতর্ক রয়েছি। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ছাত্রলীগ পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে।’

সামনের দিনে প্রতিটি হল, বিভাগে অভিযান চালিয়ে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।