শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বিভাগীয় পর্যায়ে যেতে পারছে না রাবি : উপাচার্য
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থী ভর্তিতে বিভাগীয় পর্যায়ে যেতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়টি। তবে, খুব শিগগির এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় আছেন তারা।
আজ শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য এসব কথা বলেন৷ তিনি বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে আমাদের শিক্ষক সংকট রয়েছে৷ নানাবিধ কারণে আমরা নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না৷ তৎকালীন প্রশাসনের কিছু কারণে এতে মন্ত্রণালয় ও হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে, সম্প্রতি আমরা সেই নিষেধাজ্ঞাগুলো কাটিয়ে উঠেছি৷ আগামীতে শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হলে বিভাগীয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করব৷'
এর আগে লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ সেশনের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী মঙ্গলবার (৫ মার্চ)। পরীক্ষা চলবে ৭ মার্চ পর্যন্ত৷ এবারের ভর্তি পরীক্ষায় বিশেষ কোটাসহ চার হাজার ৪৩৮টি আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে মোট এক লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০ টি। সে হিসাবে প্রতি আসনের বিপরীতে লড়াই করবেন ৪২ জন ভর্তিচ্ছু। তিনি আরও জানান, এ, বি ও সি তিনটি ইউনিটে এবারের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে৷ 'এ' ইউনিটে ৭৪ হাজার ৭৮৫টি, 'বি' ইউনিটে ৩৪ হাজার ৫৪১টি এবং 'সি' ইউনিটে ৭৬ হাজার ৩৫৪টি চূড়ান্ত আবেদন সম্পন্ন হয়েছে। এবার একক আবেদনকারীর সংখ্যা এক লাখ ৫৪ হাজার ৯৭৭ টি।
উপাচার্য বলেন, এক ঘণ্টাব্যাপী ভর্তি-পরীক্ষা এমসিকিউ পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হবে। পরীক্ষা চলাকালে কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কক্ষের বাইরে যেতে পারবে না। পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন ও ক্যালকুলেটরসহ মেমোরিযুক্ত অন্য কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা যাবে না। সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর থাকবে৷ পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ২৫টি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
জালিয়াতির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ। এখানে কোনো ধরনের জালিয়াতি বা কারসাজির সুযোগ নেই। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সজাগ আছে। কোনো প্রকার জালিয়াতি, কারসাজি বা অশুভ তৎপরতা সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য তথ্য পেলে প্রক্টর দপ্তরকে অবহিত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি৷ ভর্তি পরীক্ষায় কেউ অসদুপায় অবলম্বন করলে ভর্তি বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, একটা চক্র বিভিন্নভাবে মানুষকে প্রতারিত করে আসছে৷ তবে, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় তাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এটা নীরব ঘাতকের মতো ব্যাধি হয়ে আমাদের সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে৷ কিন্তু, অন্যান্য বছরের তুলনায় গত বছর জালিয়াতি অনেকাংশে কম হয়েছে৷ যাদেরকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি, তাদেরকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সাময়িক বিচার করা হয়েছে৷
এ সময় জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডের সঞ্চালনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ ও বিভিন্ন অনুষদের অধিকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷