কোটা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়।
আজ শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন।
মো. আরশাদ হোসেন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। মামলার বাদী আর্মড পার্সোনেল ক্যারিয়ারের (এপিসি) চালক খলিলুর রহমান। তবে মামলায় কারও নাম না দিয়ে অজ্ঞাতনামা অনেক আসামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কোটা আন্দোলনকারীরা যেন সড়কে অবস্থান না নিতে পারেন, সেজন্য পুলিশ লোহার ব্যারিকেড দিয়েছিল। কিন্তু, আন্দোলনকারীরা সেই ব্যারিকেড উঠিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সড়কে জায়গা করে নেন। ওই সড়কে একটি এপিসি কার ছিল। এপিসি কার হচ্ছে যুদ্ধে ব্যবহৃত একপ্রকার অস্ত্রসজ্জিত যানবাহন। ওই যানবাহনটি আন্দোলনকারীদের মিছিলের মধ্যে পড়ে। পরে কারটি সরে যেতে বাধ্য হয় আন্দোলনকারীদের জন্য।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে চলতি মাসের শুরু থেকে সড়ক-মহাসড়ক এমনকি রেলপথ অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করলেও সেই অর্থে কোনো বাধা দেয়নি পুলিশ। সরকার বা ক্ষমতাসীনেরাও মোটামুটি চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু, গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে বদলে যায় পরিস্থিতি। সব পক্ষের গলা চড়া। সবাই জোরেশোরে জানিয়ে দিল, শিক্ষার্থীদের আর রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।
আর তারই ধারাবাহিকতায় আন্দোলনের অংশ হিসেবে ‘বাংলা ব্লকেড’ চলাকালে গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এদিন, কুমিল্লা ও ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার সংক্ষিপ্ত রায় গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সংক্ষিপ্ত রায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটা বজায় রাখতে বলা হয়। সরকার প্রয়োজনে কোটার অনুপাত পরিবর্তন, হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারবে। আর এই রায় সরকারের ওপর কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না। কোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সরকার সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করতে পারবে।