সেই জাবি শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার, ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হলের কক্ষ থেকে বহিরাগত এক যুবককে আটকের ঘটনায় এক নারী শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার নাম অর্পা খন্দকার চাঁদনী। তিনি নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৫২ ব্যাচের শিক্ষার্থী। থাকতেন নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শৃঙ্খলা সংক্রান্ত অধ্যাদেশ-২০১৮-এর ৪ (১) (খ) ধারা অনুযায়ী সন্ধ্যায় তাকে এক অফিস আদেশে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এবিএম আজিজুর রহমান।
বিষয়টি তদন্তের জন্য নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের ওয়ার্ডেন সহযোগী অধ্যাপক হাবিবুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে শনিবার মধ্যরাতে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের তৃতীয় তলায় অর্পা খন্দকার চাঁদনীর কক্ষ থেকে আশরাফুল আলম পারভেজ নামের (৩১) বহিরাগত যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনা ক্যাম্পাস জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। আশরাফুল আলম পারভেজ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ডাবল মুরিং থানার মিস্ত্রিপাড়া মহল্লার মৃত মকবুল আহাম্মেদের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে হিম উৎসব শেষে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কপালে টিপ, প্লাজু ও মুখে ঘোমটা দিয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে প্রবেশ করেন পারভেজ। অর্পা খন্দকার চাঁদনীর বাড়ি কুষ্টিয়া। সে বিবাহিত। তার স্বামীর বাড়ি মানিকগঞ্জে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা। পরে নারী সাজিয়ে অর্পা খন্দকার চাঁদনী ওই যুবককে নিজের কক্ষে নিয়ে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে গভীর রাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী বলেন, আমরা উভয়েই ভালো বন্ধু। হিম উৎসবে সে এসেছিল। রাতে থাকার জায়গা না থাকায় তাকে হলে নিয়ে এসেছি। আমরা কেউ আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম না।
পারভেজ বলেন, আমরা দুজন ভালো বন্ধু। সাত বছরের বন্ধুত্ব। দুজনেই লালন ভক্ত।
তবে ওই নারী শিক্ষার্থীর স্বামীকে ফোন দেওয়া হলে তিনি পারভেজকে চেনেন না বলে জানান।
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত শনিবার রাত ১০টার দিকে ওই ছাত্রীর সঙ্গে হলে প্রবেশ করেন আশরাফুল নামের এক বহিরাগত যুবক। এ সময় তার কপালে টিপ, পরনে প্লাজো ও ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢাকা ছিল। তার পোশাক ও হাঁটার ধরন দেখে হলের কয়েকজন ছাত্রীর সন্দেহ হলে বিষয়টি হল সুপারকে জানানো হয়।
এক পর্যায়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হল সুপারসহ কয়েকজন গিয়ে ওই ছাত্রীর কক্ষে আশরাফুলকে দেখতে পান। এরপর তাকে আটক করে হল প্রাধ্যক্ষ ও প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতিতে আশুলিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীকে তার স্বামীর কাছে এবং বহিরাগত যুবককে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।