ববিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মিছিল

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামে থানায় করা মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটামের ৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মামলা প্রত্যাহার না করায় মশাল মিছিল ও বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে মশাল মিছিলটি ভোলা রোড প্রদক্ষিণ করে ১নং গেট দিয়ে প্রবেশ করে আবারও গ্রাউন্ড ফ্লোরে গিয়ে শেষ হয়।
আন্দোলনরতরা অভিযোগ করেন, উপাচার্য (ভিসি) ড. শুচিতা শরমিন গতকাল রোববার তার বাসভবনে আওয়ামী দোসর শিক্ষকদের নিয়ে গোপন বৈঠক করেছেন। মিছিলে অংশ নেওয়া রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রফিক বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে আমরা প্রশাসন বরাবর আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পূর্নবাসন চলমান যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের করা ষড়যন্ত্রমূলক হয়রানি মামলা ছয় ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করার আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম, কিন্তু প্রশাসন মামলা প্রত্যাহার না করে মামলাটিকে আরও বেগবান করার চেষ্টা করছে। তাই আমাদের এই মশাল মিছিল৷’
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোশারফ বলেন, ‘আমাদের যে দাবিগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূরণ না হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই বড় আন্দোলনে যাব।’
ভিসির বাসভবনের গেট খুলে বাসভবনে প্রবেশ করে সিন্ডিকেট সভা পণ্ড করে বিক্ষোভ করায় উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের নির্দেশে মামলা করার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ লিটন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সানোয়ার পারভেজ লিটন বলেন, ‘উপাচার্যের নির্দেশে গত শনিবার রাতে বন্দর থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের নামে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভাঙচুরের ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমি বাদী হয়ে অভিযোগটি করি।’
এদিকে, রোববার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের স্বৈরাচারী মনোবৃত্তি পরিত্যাগ করতে এবং প্রশাসন কর্তৃক সংঘটিত সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন বিভাগের ৫০ জন শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপউপাচার্য সমীপে এ প্রতিবাদলিপি দেন তারা।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসমাজ হিসেবে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি অত্যন্ত অনাকাক্ষিত ও নিন্দনীয় কতিপয় ঘটনার উদ্ভব হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শিক্ষার সুষ্ঠু, স্বাভাবিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে এমন কার্যক্রম বন্ধ হওয়া জরুরি।