ঢামেক শিক্ষার্থীদের বৈঠক ফলপ্রসূ, আন্দোলন নিয়ে সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার

চলমান অচলাবস্থা নিরসনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শিক্ষার্থীরা। বৈঠকের আলোচনাকে ফলপ্রসূ হিসেবে মনে করছেন তারা। তবে আন্দোলন নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত জানাতে পারছেন না এসব শিক্ষার্থী।
আজ সোমবার (২৩ জুন) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে সচিবালয়ে শুরু হওয়া বৈঠক চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সাত সদস্যের একটি দল অংশ নেয়। এ সময় ডা. ফজলে রাব্বি হলের সহকারী প্রভোস্ট ডা. শহিদুল ইসলাম আখন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সচিবালয় থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৭৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী তমাল রায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর সঙ্গে সাতজন স্টুডেন্ট প্রতিনিধির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তিনি আশ্বাস দেন যে আগামী সপ্তাহে একনেকের মিটিংয়ে ১৯টি মেডিকেল কলেজের হল সংস্কারের প্রস্তাব উঠবে; সেখানে ঢামেক প্রাধান্য পাবে।
এর আগে সকালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে সচিবালয়ে যান শিক্ষার্থীরা। কিন্তু উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়নি। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও চিকিৎসক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডা. মঈন উদ্দিন চিশতী। তিনি বলেন, ‘সারাদেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে যখন অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়, তখন তাদের বসবাস করতে হচ্ছে অমানবিক পরিবেশে—বাসস্থানের সংকট, ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, ঝুঁকিপূর্ণ বাসস্থান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যবিধি নেই। এই অব্যবস্থাপনা দ্রুত সমাধান জরুরি। শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি আশা করি সরকার দ্রুত এবং মেডিকেল কলেজ প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
গত শনিবার (২১ জুন) পাঁচ দফা দাবিতে ঢামেক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়। এদিন অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি কলেজ প্রশাসনকে স্মারকলিপিও দেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে একই কারণে ১৭ জুন ওরিয়েন্টেশন বর্জন করেন নবাগত কে-৮২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—নতুন ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণের জন্য দ্রুত বাজেট পাস, আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, নতুন একাডেমিক ভবনের জন্য আলাদা বাজেট পাস করা, আবাসন ও একাডেমিক ভবনের বাজেট পৃথকভাবে অনুমোদন ও দ্রুত দৃশ্যমান বাস্তবায়ন এবং সব প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি শিক্ষার্থীদের সামনে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপনের জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিয়োগ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শনিবার কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে। একই সঙ্গে রোববার বেলা ১২টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।