কক্সবাজার সদর ও উখিয়ায় আ.লীগের জয়জয়কার, রামুতে ভরাডুবি
কক্সবাজারের তিন উপজেলার ২১ ইউনিয়নের নির্বাচনের মধ্যে ১৯টির বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেছে জেলা নির্বাচন অফিস। নির্বাচনী সহিংসতা ও ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টার কারণে দুটি ইউপির দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে। ফলে ওই দুই ইউনিয়নের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী কক্সবাজার সদর উপজেলার পাঁচটির মধ্যে তিনটিতে নৌকার প্রার্থী জয়ী হয়েছে, উখিয়ার ৫টি ইউপির ৩টি আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছে। তবে রামুর ১১ ইউপির ৪টিতে আওয়ামী লীগ এবং ৬টিতে কক্সবাজার-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের অনুসারী বিদ্রোহী প্রার্থী এবং অপরটিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র মতে, কক্সবাজার সদরের ৫টি ইউনিয়নের ঝিলংজা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান টিপু সুলতান ৮৬৯৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতনেতা আবুল কাশেম পেয়েছেন ৪৩৩০ ভোট। ভারুয়াখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল উদ্দিন ৪৫৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটমত প্রতিদ্বন্দ্বী আমিনুল হক ৩৫০৯ ভোট পেয়েছেন।
চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে নৌকার মাঝি মুজিবুর রহমান ৬২১১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জিয়াউল হক পেয়েছেন ৪৯৪১ ভোট।
এছাড়া পিএমখালী ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ৫১৩৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সৈয়দ নূর।
অপরদিকে, খুরুশকুল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. শাহজাহান ছিদ্দিকী খুরুশকুলে ১১টি কেন্দ্রে প্রায় ৬৫০ ভোটে এগিয়ে আছেন। তবে স্থগিত কেন্দ্রে ভোট রয়েছে দুই হাজার ৬৪৪।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, সদর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে মোট ৫৭টি কেন্দ্রের ৫৬টিতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
রামু উপজেলার ১১টি ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৪টি ইউনিয়নে এবং বিদ্রোহী প্রার্থীরা ৭টি ইউনিয়নে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে।
বেসরকারি ফলাফলে জানা যায়, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী ও কক্সবাজারর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের অনুসারী সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টো (আনারস) ৬ হাজার ৩৪৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক চৌধুরী (নৌকা) ৪ হাজার ৭৩৩ ভোট পেয়েছেন।
ঈদগড় ইউনিয়নে সাংসদ কমলের অনুসারী রামু উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভুট্টো (আনারস) ৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আলম (নৌকা) তিন হাজার ২৯৫ ভোট পেয়েছেন।
গর্জনিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল (নৌকা) ৪ হাজার ১৮৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মৌলা চৌধুরী (মোটর সাইকেল) দুই হাজার ৯৭৭ ভোট পেয়েছেন।
কচ্ছপিয়া ইউনিয়নে সংসদ কমলের অনুসারী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবু মো. ইসমাঈল নোমান (আনারস) তিন হাজার ৭২৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত নেতা মো. তৈয়ব উল্লাহ (চশমা) তিন হাজার ৪২৫ ভোট পেয়েছেন।
কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে সাংসদ কমলের অনুসারী সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান শামশুল আলম (মোটর সাইকেল) দুই হাজার ৭৭৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি ওসমান সরওয়ার মামুন (নৌকা) দুই হাজার ৭৫০ ভোট পেয়েছেন।
জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল শামশুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স (নৌকা) ৪ হাজার ৫৬৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবছার কামাল।