নৌকায় সিল মারার নির্দেশদাতা ২০০১ ভোটে পিছিয়ে

Looks like you've blocked notifications!

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিল মেরে দেখানোর নির্দেশদাতা আবুল কালাম আজাদ ২০০১ ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন।

গতকাল বুধবারের নির্বাচনে দিঘলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঢুকে তার কর্মীরা জোর করে নৌকায় সিল মেরে ব্যালট পেপার বাক্সে ঢুকিয়ে দেন। ফলে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ও বাতিল করেন।

ইউনিয়নের অপর ১০টি কেন্দ্রের ফলাফলে দুই হাজার এক ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপিনেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক দুলাল। তিনি পেয়েছেন ১১ হাজার ৯৪ ভোট। আর আবুল কালাম আজাদ নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন নয় হাজার ৯৩ ভোট। তবে যে কেন্দ্রের ভোট স্থগিত রয়েছে, সেখানে ভোটার দুই হাজার ৮৪৪।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন বলেন, বানেশ্বর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঢুকে একদল লোক জোর করে নৌকায় সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে হাজির হলেও তার আগেই তারা পালিয়ে যান। পরে সেই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ও ভোট বাতিল করা হয়। যেহেতু ওই ব্যক্তিরা নৌকায় সিল মারার জন্য এসেছিলেন, তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে তাঁরা নৌকা প্রার্থীর সমর্থক।

ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে। মানুষ খুব শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছিলেন। ঠিক সেই সময় মোটরসাইকেল নিয়ে একদল লোক কেন্দ্রে জোর করে প্রবেশ করে। তারা এজেন্টদের মারধর করে ব্যালট পেপারে সিল মারা শুরু করে। তাৎক্ষণিক তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি জানান। পরে তারা কেন্দ্রে এসে সবকিছু বিবেচনা করে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন। এর আগে বানেশ্বরের হাতিনাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে জোর করায় শিমুল (২২) নামের এক যুবককে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছের ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঁচ দিনের কারাদণ্ড ও ১০০ টাকা জরিমানা করেছেন।

গত শুক্রবার রাতে বানেশ্বরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের দেওয়া বক্তৃতার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে গেলে নৌকায় সিল মেরে দেখাতে হবে। না হলে ভোটের মাঠেই ঢুকতে দেওয়া হবে না। যদি তা না পারা যায়, তবে তাদের তালিকা করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল নির্বাচনে কেন্দ্রে জোর করে নৌকায় সিল মারার এ ঘটনা ঘটল। তবে প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।