গাজীপুরের নগরমাতা হলেন জায়েদা খাতুন

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রেকর্ড গড়ে বিজয়ী হয়েছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। ছবি : স্টার মেইল

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রেকর্ড গড়ে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লার সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন জায়েদা খাতুন। তাঁর বিজয়ের মধ্য দিয়ে গাজীপুরবাসী একজন নগরমাতা পেলো। ভোটের ফলাফলে তৃতীয় হওয়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট। 

গাজীপুর শহরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দেড়টার পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বেসরকারি এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

সাধারণ গৃহিণী থেকে বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েই আলোচনায় আসেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা ৬১ বছর বয়সী জায়েদা খাতুন। ভোটের প্রচারে নিজেকে জাহাঙ্গীরের মা হিসেবেই পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

মধ্যরাতে গাজীপুর শহরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে রিটার্নিং কর্মকর্তা যখন বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজয়ী জায়েদা খাতুনের ছেলে ও তাঁর নির্বাচনি কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম। বিজয়ের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “মায়েদের জয় হয়েছে গাজীপুরের নির্বাচনে। গাজীপুরে নৌকা জিতছে আর ব্যক্তি হেরেছে। আমি কখনও আওয়ামী লীগ ও নৌকার বিরুদ্ধে যাইনি এবং যাবও না।”

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোটগ্রহণ। ভোট নেওয়া হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে)। ২০১৩ সালে সিটি করপোরেশন গঠিত হবার পর গাজীপুরের তৃতীয় নির্বাচন এটি।  গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে। সারা দেশের মানুষের চোখ ছিল গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনের ফলাফলের দিকে। এবারের নির্বাচনে কে জয়ী হবেন? কে হবেন গাজীপুরের তৃতীয় নগরপিতা। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গাজীপুর নগরবাসী তৃতীয়বারের মতো পেলেন একজন অরাজনৈতিক নগরমাতা।

নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ছিল না প্রার্থীদের। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও বিচ্ছিন্ন দুই-একটি ঘটনা ছাড়া কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। নির্বাচন নিয়ে বেশ তৎপর ছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন অফিসে বসে সিসি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ করা হয়। ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে বেআইনিভাবে প্রবেশের অভিযোগে দুজনকে আটক করে পুলিশ।

প্রায় ৩৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ৩০ লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটারের সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, মহিলা ভোটার পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ১৮ জন।