ডিসিদের পক্ষপাতমূলক আচরণ চাই না : সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আমরা কোনোভাবেই চাই না কোনো জেলা প্রশাসকের পক্ষপাতমূলক আচরণ প্রতিফলিত হোক। আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে আজ সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
জামালপুরের ডিসিকে প্রত্যাহার করার চিঠি দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তফসিলের আগে চিঠি দিতে কোথাও বাধা নেই। পাঁচ বছর পুরো সময়টাই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব, কর্তব্য, এখতিয়ার রয়েছে। তফসিলটা আমরা ঘোষণা করার পর স্পেসিফিক কিছু দায়িত্ব বাধ্যতামূলকভাবে আমাদের করতেই হবে। তফসিলের আগেও যদি এমন কোনো কিছু হয় যেটা নির্বাচনের আস্থাভাজনতা, সরকার বা নির্বাচন কমিশনের আস্থাভাজনতা বা যারা নির্বাচন করবেন তাদের পক্ষপাতহীন আচরণ নিয়ে যদি বিতর্ক উত্থাপিত হয়; তাহলে নির্বাচন কমিশন অবশ্যই সরকারের নজরে সেটা আনতে পারে। এটা নির্বাচনের স্বার্থে, মানুষের আস্থার স্বার্থে, সরকারের স্বার্থে এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ভোটের পরিবেশ আমরা নিশ্চয়ই পর্যবেক্ষণ করতে থাকব। আমাদের যে পর্যবেক্ষণ ও প্রক্ষেপণটা অবশ্যই সজাগ রাখতে হবে। জেলা প্রশাসক গুরুত্বপূর্ণ পদ। অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকেই রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হয়। পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নির্বাচনের সময় অতি অনিবার্য প্রয়োজনীয় যে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি তাদেরকেই দেখতে হবে। তাই কোনোভাবেই আমরা চাইব না- কোনো জেলা প্রশাসকের পক্ষপাতমূলক আচরণ প্রতিফলিত হোক।
জামালপুরের ডিসি প্রত্যাহারের মতো আরও কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না? জানতে চাইলে সিইসি বলেন, যদি আমাদের কাছে এরকম কিছু প্রতীয়মান হয়, আমরা নিশ্চয়ই এই ধরনের উদ্যোগ নেব। আপনারা যে রোডম্যাপে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করেছিলেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করা? এমন প্রশ্ন করলে সিইসি বলেন, নো কমেন্টস- থ্যাংক ইউ। ওইটার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না।
এখন কেউ ভোট চাইতে পারবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর আমি এখন দিচ্ছি না।
আপনি বলছেন যে তফসিলের আগেও নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে আপনাদের কিছু করার সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে যখন প্রধানমন্ত্রীর সফরে বা সরকারি বা রাষ্ট্রীয় কোনো কাজে যাচ্ছেন। ওখানে সরকারি কাজে যাওয়ার পরেও যখন ভোট চাইছেন, সেখানে কি কমিশনের কথা বলার এখতিয়ার রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর এই মুহূর্তে চট করে আপনাকে দিতে পারব না। এখন সকলেই নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন- বিএনপি কথা বলছে, আওয়ামী লীগ কথা বলছে, জাতীয় পার্টি কথা বলছে, সকলেই কথা বলছে তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে। কিন্তু আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমরা আমাদের তরফ থেকে উনি যদি বলেন- আপনারা আমাকে ছাড়া আর কাউকে ভোট দেবেন না। তাহলে নিশ্চয়ই আমরা ইন্টারফেয়ার করতে পারব। কিন্তু উনি ভোট চাইছেন, বিএনপি ভোট চাইছে, জাতীয় পার্টি ভোট চাইছে, সবাই ভোট চাইছে। এই বিষয়টি আমরা ওইভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখিনি।
সরকারি সফরে গিয়ে যদি কেউ ভোট চান? এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, এই বিষয়টি কেউ উত্থাপন করেননি। আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখিনি। যখন তফসিল ঘোষণা হয় তার পরে যে নির্বাচনি আচরণ- কারণ উনি নির্বাচনে দাঁড়াবেন কি দাঁড়াবেন না, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি করবেন না, সেটি আমরা এখনো জানি না। কাজেই সময় হলে তখন আমরা দেখবো।
সম্প্রতি সুধীজনদের সঙ্গে সংলাপে অর্জনের বিষয়ে সিইসি বলেন, অর্জন তো আপনাদেরকে ওখানেই বলা হয়েছে। আসলে আমরা কিন্তু স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি এবং দায়িত্ববোধ জাগ্রত করার আমাদের একটা দায়িত্ব। যেমন এটির মাধ্যমে আমার উপরও একটি চাপ সৃষ্টি হয়। আমরা যদি যারা বিশিষ্টজন, তারা কি বলতে চান এবং দায়িত্বটা শুধু আমাদের নয়, নির্বাচন কমিশনের ওপর যেমন দায়িত্ব রয়েছে, সরকারের ওপর যেমন দায়িত্ব রয়েছে, পলিটিশিয়ানদের ওপর যেমন দায়িত্ব রয়েছে, আরও অনেকের ওপর যে দায়িত্ব রয়েছে। মিডিয়ার সুবাদে এই জিনিসগুলো যখন প্রচারিত হয়- যারা ভোট দিতে যাবেন ভোটার, যারা রাজনীতিবিদ তাদের যে দায়িত্ব, আমাদের কতটুকু দায়িত্ব, সরকারের যে দায়িত্ব এর ওপর যদি আলাপ আলোচনা হয়। তাহলে কিছুটা হলেও ওর একটা দায়িত্ব বোধ বা একটা চাপ সৃষ্টি হতে পারে।