ইসির কাছে যা জানতে চাইল মার্কিন প্রতিনিধিদল

Looks like you've blocked notifications!
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার বৈঠকে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী মিশনের প্রতিনিধিদল। ছবি : এনটিভি

সফররত মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী মিশনের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকারের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছে তারা। এ সময় প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা নির্বাচনের সময় কমিশন কীভাবে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে, সে বিষয়সহ নানা প্রসঙ্গে জানতে চান। বৈঠকে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী দলের অধিকাংশ প্রশ্নের জবাব দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আর দু-একটি প্রশ্নের উত্তর দেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তবে, ‘তারা উত্তর জেনে কী করবেন, সেটা আমরা জানি না‘ বলে জানান সিইসি। বলেন, ‘প্রতিনিধিদল দেশে ফিরে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন—অবজারভার টিম পাঠাবেন কি পাঠাবেন না, অথবা পাঠালে কীভাবে পাঠাবেন।’

আজ বেলা ১১টায় শুরু হয়ে দু-ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আরও চার কমিশনারসহ ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ সচিবলায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাদের কাছে নানা বিষয়ে জানতে চান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) নয়জন সদস্য।

বৈঠকে ইসির কাছে প্রতিনিধিদলের একজন জানতে চান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও ভোটগ্রহণের তারিখ কবে নাগাদ চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছে ইসি। জবাবে ইসির পক্ষ থেকে আনুমানিক দিনক্ষণের কথা প্রতিনিধিদলকে জানানো হয়।

মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর ইসির একাধিক কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রতিনিধি দলটি তফসিল ঘোষণা ও ভোটগ্রহণের তারিখ জানতে চেয়েছিলেন। মোট নয়জন মার্কিন প্রতিনিধির সবাই প্রশ্ন করেছিলেন আমাদের কাছে। তাদের যা যা জানার ছিল, তারা জানতে চেয়েছিলেন। আমরাও আমাদের তরফ থেকে উত্তর দিয়েছি।’

বৈঠকে উপস্থিত ইসির আরেক কর্মকর্তা নামপ্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রতিনিধি দলটি জানতে চেয়েছিলেন, নির্বাচনে সহিংসতার সম্ভাবনা রয়েছে কি না। তখন ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখনই এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা কঠিন। তবে, সহিংসতার পরিবেশ তৈরি হলে যথাযথ উপায়ে সমাধান করার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হবে।’

ইসির আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, প্রতিনিধিদলের এক সদস্য রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চান। কীভাবে এ নিবন্ধন দেওয়া হয়, নিবন্ধন দেওয়ার সময় কী কী দেখা হয়—এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ার কথা জানানো হয়। এ ছাড়া নির্বাচনে সরকার কী কী ধরনের সহযোগিতা করে এবং কোন কোন উপায়ে সহযোগিতা করেন; তাও জানতে চাওয়া হয়।

আইআরআই ও এনডিআইয়ের যৌথ প্রি ইলেকশন অ্যাসেসমেন্ট মিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তাদের মূল ফোকাস ছিল ফ্রি, ফেয়ার, পার্টিসিপেটরি অ্যান্ড পিসফুল ইলেকশন।’

সিইসি বলেন, ‘আমেরিকা থেকে এক প্রি অ্যাসেসমেন্ট টিম এসেছে। তারা এরমধ্যে বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ও সরকারি দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এটাকে প্রি অ্যাসেসমেন্ট টিম বলে। তারা কী করবে আমরা জানি না। তারা আমাদের কাছে যে প্রশ্নগুলো করেছে, রোল, দায়িত্ব এবং অ্যাকটিভিটিসসহ অনেক কিছু তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা সবকিছু তাদের বোঝাতে পেরেছি। ইলেকশন কমিশনের রোল, সরকারের রোল, তারা কীভাবে কাজ করে। কীভাবে আমরা ইলেকশন প্রসেসটা তুলে নিয়ে আসি।’

সিইসি আরও বলেন, ‘তারা যা যা জানতে চেয়েছিলেন, তারা জেনেছেন। এখন তারা জেনে কী করবেন, সেটা আমরা জানি না। পরে হয়তো উনারা দেশে ফিরে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন—অবজারভার টিম পাঠাবেন কি পাঠাবেন না, অথবা পাঠালে কীভাবে পাঠাবেন। এতোটুকুই, এর বাইরে আমার আর কোনো বক্তব্য নেই।’