চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির মনোনয়নপত্র বাতিল

Looks like you've blocked notifications!
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। ফাইল ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নানার বাড়ি রাজশাহীর তানোর উপজেলা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র  দাখিল করেছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা মাহিয়া মাহি। তবে, তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-১ আসনে দাখিল করা মনোনয়নপত্রে অসঙ্গতি পাওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় মাহিয়া মাহির উপস্থিতিতে মনোনয়ন বাতিল হলে তিনি এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন।    

সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে রাজশাহী-১ আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। এতে মাহিসহ আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র চার প্রার্থীরই মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। অন্য সাত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এই আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীসহ সাতজনের মনোনয়নপত্র। 

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া ওরফে মাহি তার সমর্থক হিসেবে যে ভোটারদের স্বাক্ষর দিয়েছেন, তা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে গরমিল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ললিতা মার্ডি নামের একজন নির্বাচনি এলাকার ভোটারই নন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল এলাকার ভোটার। তাই তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, তিনি আপিল করতে পারবেন। 

একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামানের দেওয়া ভোটারদের স্বাক্ষরের তালিকায়ও গরমিল পাওয়া গেছে। ৯ জনের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রাব্বানীরও ভোটারদের তালিকায় তিনজনের ঠিকানা পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী শাহনেওয়াজ আয়েশা আখতারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। তার সাতজন সমর্থকের সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ জানান, আগে কখনও নির্বাচিত হননি এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে নির্বাচনি এলাকার এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। তারা প্রার্থীদের দেওয়া এই স্বাক্ষর থেকে ১০ জন করে ভোটারের তথ্য যাচাই করেছেন। এতে চিত্রনায়িকা মাহিসহ চারজন প্রার্থীর সমর্থকদের তালিকায় গরমিল পাওয়া গেছে। 

মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণার পর চিত্রনায়িকা মাহি সাংবাদিকদের জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার এই সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। তিনি এর বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

এই আসনের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী (আওয়ামী লীগ) মো. শামসুজ্জোহা (বিএনএম), মো. আল-সাআদ (বিএনএফ), জামাল খান দুদু (তৃণমূল বিএনপি), নুরুন্নেসা (এনপিপি) ও বশির আহমেদ (মুক্তিজোট) ও মো. শামসুদ্দীনের (জাতীয় পার্টি) মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। 

মনোনয়ানপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী ছাড়া অন্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মাহি ছাড়া অন্য যে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে, তারাও আপিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

তফসিল অনুযায়ী সোমবার পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা যাবে ৬ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বৈধ প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। আর ৭ জানুয়ারি হবে নির্বাচন।