কাদের সিদ্দিকী-মুরাদ সিদ্দিকীর পরাজয়, লতিফ সিদ্দিকী বিজয়ী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম) পরাজিত হয়েছেন। তবে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বড় ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তার বড় ভাই প্রবীণ রাজনীতিক আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তাদের অপর ভাই মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে পরাজিত হয়েছেন। রোববার (৭ জানুয়ারি) রাতে বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৮ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনুপম শাহজাহান জয়ের সঙ্গে। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, অনুপম শাহজাহান ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। কাদের সিদ্দিকী গামছা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট। এ আসনে ভোট পড়েছে ৪২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
বিজয়ী অনুপম শাহজাহান টাঙ্গাইল-৮ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত মোমেন শাহজাহানের ছেলে। ২০১৪ সালে শওকত মোমেন শাহজাহানের মৃত্যুর পর অনুপম উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কাদের সিদ্দিকী এ আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
আবদুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ আসনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি ট্রাক প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ আসনের ১১৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৭টি কেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে। এতে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৮৮২ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ওরফে ঠান্ডু পেয়েছেন ৩৭ হাজার ২৩১ ভোট। এ আসনের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী শাজাহান সিরাজের মেয়ে সারওয়াত সিরাজ ওরফে শুক্লা পেয়েছেন সাত হাজার ৭৮৬ ভোট। লতিফ সিদ্দিকী এ আসন থেকে এর আগে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
এই আসনে লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকী ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আসনটিতে লতিফ সিদ্দিকী এর আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে একটি সভায় আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করা হয়। গত সেপ্টেম্বরে তিনি কালিহাতীতে গণসংযোগ শুরু করেন।
টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী মুরাদ সিদ্দিকী পরাজিত হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী ছানোয়ার হোসেনের কাছে। মুরাদ সিদ্দিকী এর আগে ২০০১ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি ওই দল থেকেই প্রার্থী হন। এরপর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের রাজনীতি ছেড়ে দেন তিনি। ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আওয়ামী লীগের পদ–পদবি না থাকলেও তিনি আওয়ামী রাজনীতির সংস্পর্শে ছিলেন। এবার সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে পাননি। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।