নওগাঁয় জামানত হারাচ্ছেন ১৯ প্রার্থী

Looks like you've blocked notifications!
নির্বাচন কমিশনের লোগো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁর পাঁচটি আসনে জামানত হারাচ্ছেন ১৯ প্রার্থী। এই পাঁচটি আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন মোট ২৯ প্রার্থী। আজ সোমবার (৮ জানুয়ারি) জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

কোনো প্রার্থী যদি প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ (সাড়ে ১২ শতাংশ) ভোট না পান তাহলে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। সেই হিসাবে নওগাঁ-১ আসনের দুজন, নওগাঁ-৩ আসনে পাঁচজন, নওগাঁ-৪ আসনে চারজন, নওগাঁ-৫ আসনে দুজন ও নওগাঁ-৬ আসনে ছয়জন প্রার্থী প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় তাঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

নওগাঁ-১ আসনে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাধন চন্দ্র মজুমদার নৌকা প্রতীকে এক লাখ ৮৬ হাজার ৯০০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী খালেকুজ্জামান তোতা ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৭২৯ ভোট। এ ছাড়া অন্য দুই প্রার্থী আকবর আলী (জাতীয় পার্টি) পেয়েছেন পাঁচ হাজার ২৫ ভোট ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী (ঈগল) মাজেদ আলী পেয়েছেন দদুই হাজার ১১৬ ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল চার লাখ ৫০ হাজার ৯৬১। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা দুই লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬। ফলে মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় আকবর আলী ও মাজেদ আলীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।

নওগাঁ-৩ আসনে সাত প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী এক লাখ ৩৮ হাজার ৫৬১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী ছলিম উদ্দিন তরফদার পেয়েছেন ৬০ হাজার ৫১ ভোট। এ ছাড়া মাহবুব-উল মান্নাফ কাঁচি প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৩৩১ ভোট, মাহফুজা আকরাম চৌধুরী (ঈগল) ১২ হাজার ৭৮৬ ভোট, মাসুদ রানা (লাঙ্গল) তিন হাজার ৪৪১ ভোট, শামিনুর রহমার ওরফে চিকন আলী (কেটলি) এক হাজার ৭০১ ভোট, সোহেল কবির (সোনালী আঁশ) পেয়েছেন ৫৯৭ ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল চার লাখ ২০ হাজার ৯০৬ জন। ভোট পড়ে দুই লাখ ২৫ হাজার ৬৭৭।  তাই এ আসনে মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পাওয়ায় পাঁচ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

নওগাঁ-৪ আসনে ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এখানে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী ব্রুহানি সুলতান মামুদ গামা আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাহিদ মোর্শেদকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ব্রুহানি সুলতান মামুদ গামা পেয়েছেন ৮৫ হাজার ১৮০ ভোট আর নাহিদ মোর্শেদ পেয়েছেন ৬২ হাজার ১৩২ ভোট। এ ছাড়া কয়েকবারে সংসদ সদস্য ইমাজ উদ্দিন এবার নৌকা প্রতীক না পেয়ে ঈগল মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পেয়েছেন ১১ হাজার ১৯০ ভোট। এ আসনের আরও তিন প্রার্থী আফজাল হোসেন (কাঁচি) ৩৭৫ ভোট, আব্দুর রহমান (বাংলাদেশ কংগ্রেস) ৪৬৭ ভোট, আলতাফ হোসেন (জাতীয় পার্টি) ৪৪০ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১৯ হাজার ১৭৫। সেখানে ভোট পড়ে এক লাখ ৬৩ হাজার পাঁচটি। সেই হিসেবে কয়েকবারে সংসদ সদস্য ইমাজ উদ্দিনসহ চারজনের জামানত বাজেয়াপ্ত হতে যাচ্ছে।
নওগাঁ-৫ আসনে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন জলিল জন এক লাখ চার হাজার ৬৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণ পেয়েছেন ৫২ হাজার ৮৮৪ ভোট। এ ছাড়া অন্য দুই প্রার্থী আজাদ হোসেন মুরাদ (মশাল) পেয়েছেন ৭২৮ ভোট ও ইফতারুল ইসলাম বকুল পেয়েছেন এক হাজার ৯১৩ ভোট। এই আসনে মোট ভোটার ছিল তিন লাখ ৪৪ হাজার ১৪৪। ভোট পড়েছে এক লাখ ৬৪ হাজার ৭৯০টি। এই আসন থেকে দুই প্রার্থীর জামানত হারাতে যাচ্ছেন।

নওগাঁ-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন আট প্রার্থী। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন হেলালকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন। তিনি পেয়েছেন ৭৬ হাজার ৭১৭ ভোট আর আনোয়ার হোসেন হেলাল পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭১ ভোট। এ ছাড়া এই আসনে খন্দকার ইন্তেখাব আলম (আম) ১৯৯ ভোট, জাহিদুল (ঈগল) ৩৩১ ভোট, আবু বেলাল হোসেন (লাঙ্গল)  ৫৮১ ভোট, নওশের আলী (কাঁচি) দুই হাজার ২৪৩ ভোট, পিকে আব্দুর রব  (সোনালী আঁশ) ২৮৮ ভোট ও আব্দুস সাত্তার (ডাব) পেয়েছেন ২০৬ ভোট। এই আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ২৭ হাজার ৯৭৩। ভোট পড়েছে এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬০টি। তাই এ আসন থেকে ছয় প্রার্থী তাঁদের জামানত হারাচ্ছেন।
নওগাঁয় ছয়টি সংসদীয় আসন হলেও নওগাঁ-২ আসনে এক স্বতন্ত্রপ্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই আসনের ভোটগ্রহণ বাতিল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনার। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ধামইরহাট)  আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।