মালয়েশিয়ায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করল এনটিভি দর্শক ফোরাম
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষাশহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে মালয়েশিয়া এনটিভি দর্শক ফোরাম ও বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মালয়েশিয়া (বিএসইউএম)। গতকাল রোববার কুয়ালালামপুরের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ভাষা দিবস ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায়। শুরুতেই অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারে মহান ভাষাশহীদদের সম্মানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সেইসঙ্গে কোমলমতি শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। চিত্রাঙ্কনের বিষয় ছিল ভাষা দিবস।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাইমা জাহিন নিধি ও মাহমুদুর রহমান জিসান। এনটিভির মালয়েশিয়া প্রতিনিধি কায়সার হামিদ হান্নান ও বাংলাদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ শাহাজান আলম সাজু, শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ইঞ্জিনিয়ার চৌধুরী নেছারুল হক, সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডের উপদেষ্টা শাহানাজ বেগম লাভলী, রংপুরের চাঁদ পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইমদাদুল হক তোয়াব, সাংবাদিক ও ইভেন্ট অর্গানাইজার এস এম সজিবুল ইসলাম, মাশা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আবুল বাসার, কুয়ালালামপুর রিজেন্ট এয়ারওয়েজের এজিএস ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান খান, মাহবুব আলম শাহ, মোশারফ হোসেন, এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন নিপু, রাশেদ বাদল, নাজমুল ইসলাম বাবুলসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে কে এম সালাতুজ্জামানের ছয় বছর বয়সী ছেলে কে এম ফাহমিদ জামান। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ড. খালেদা শারমিনের ১০ বছর বয়সী মেয়ে নাজিফা শারমিন। যৌথভাবে তৃতীয় স্থান অর্জন করে মুহাম্মাদ আবদুল লতিফের ১০ বছর বয়সী মেয়ে নূহা নাবিহা ও মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলামের ১২ বছর বয়সী ছেলে মোহাম্মাদ জারিফুল ইসলাম।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিজয়ীদের বিশেষ পুরস্কারসহ সবাইকে সৌজন্য উপহার দেওয়া হয়। সর্বশেষে দেশাত্মবোধক ও ভাষা দিবস নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে এবং বাংলাদেশের স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, অভিনয়শিল্পী ও আবৃত্তিকারদের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের ইতি টানা হয়। অনুষ্ঠানে দল-মত নির্বিশেষে গণ্যমান্য জাতীয় ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আগত দর্শকেরা তাঁদের আবেগাপ্লুত অনুভূতি ব্যক্ত করেন এবং বিদেশের মাটিতে দেশীয় ভাষা-সংস্কৃতির বিকাশ ও বিদেশের মাটিতে একখণ্ড বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার জন্য আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বলেন, ‘সারা বিশ্ব এখন একযোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে। আমরা বাংলাদেশি হিসেবে সত্যিই গর্বিত। পৃথিবীর অন্য কোনো জাতি ভাষার জন্য রাজপথে তাজা রক্ত ঝরায়নি। একমাত্র বাঙালি জাতিই ভাষার জন্য রাজপথে তাজা রক্ত ঝরিয়েছে। সেই শহীদের স্মরণে আজ আমরা বিদেশের মাটিতে এই প্রোগ্রামটি করতে পেরে গর্ব অনুভব করছি। আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভাষা দিবসকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরার প্রয়াস চালাচ্ছি। অনুষ্ঠানে আগত দর্শকদের অনুভূতি দেখে বোঝা যায়, এ ক্ষেত্রে আমরা সফল হয়েছি। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য আমরা বারবার এমন আয়োজন করতে চাই।’