মিয়ানমারের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে নিউইয়র্কে সমাবেশ
রোহিঙ্গা নিধন, গণহত্যা ও নির্যাতনের দায়ে মিয়ানমারের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পেশাজীবী নাগরিক। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানির শেষ দিন গতকাল বৃহস্পতিবার এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে মিয়ানমার কনস্যুলেটের সামনে বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এই সমাবেশের আয়োজন করে কনশাস সিটিজেনস অব ইউএসএ নামে একটি সংগঠন।
সংগঠনটির আহ্বায়ক ও বিশিষ্ট চিকিৎসক ফেরদৌস খন্দকারের সভাপতিত্বে এ প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছাড়াও বিভিন্ন দেশের মানুষ যোগ দেন।
এ সময় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে চলে আসা হত্যা, ধর্ষণ ও বাস্তুচ্যুত করার অভিযোগে দেশটির বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি তোলেন সবাই।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ‘হত্যা বন্ধ করো’, ‘নির্যাতন থামাও’, ‘বিচার নিশ্চিত করো’, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে নাও’ ইত্যাদি স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। সেখানে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও বিদেশি সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডা. ফেরদৌস বলেন, ‘দেখুন এটি কেবল বাংলাদেশের জন্য সমস্যা নয়, এটি গোটা মানবতার সংকট। নিরপরাধ নারী, শিশুসহ সর্বস্তরের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমার যে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়েছে, তার বিচার হতেই হবে। আর সেটি নিশ্চিত করার এখনই সময়।’
ফেরদৌস আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তাদের সম্মান দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।’ এ জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরো সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে অংশ নেন লেখক ও সাংবাদিক শামীম আল আমিন, সংগীতশিল্পী পাপি মনা, যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন দেওয়ান, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন, বিশিষ্ট নাগরিক আরিফ মাহমুদ, মারুফ রেজা, আসিফ মাহমুদ, আবদুল্লাহ আল মারুফ ও চিকিৎসক শাম্মী চৌধুরীসহ অনেকে।
এ সময় মিয়ানমারের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর তোলা হয়। তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে অসংখ্য মানুষ সেই দাবিতে নিজেদের একাত্মতা জানান। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্বাক্ষরগুলো পরে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে পাঠানো হবে।
এদিকে তিন দিনের শুনানি শেষে আইসিজের বিচারক প্যানেলের প্রধান আবদুল কাউয়ি আহম্মেদ ইউসুফ জানান, যত দ্রুত সম্ভব এ মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। তার জন্য নির্দিষ্ট কোনো তারিখ আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। তৃতীয় ও শেষ দিনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শোনে আইসিজের ১৭ সদস্যের বিচারকের প্যানেল।