সিডনি ইউনিভার্সিটিতে মেধাবী বাংলাদেশিদের আলোকিত সন্ধ্যা

Looks like you've blocked notifications!
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটির ম্যানিং হাউজে বাংলাদেশ কালচারাল নাইটে উপস্থিত সিডনি ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। ছবি : এনটিভি

সেই দিন সন্ধ্যাটা ছিল কিছুটা মেঘলা, বৃষ্টি আসবে নাকি মেঘ সরবে এমন ধন্দে সিডনির আকাশ কিছুটা স্তম্ভিত, মনে হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটির ম্যানিং হাউজে কিছু একটা হচ্ছে!

লাল লিপস্টিক আর গোলাপি কামিজ পরে ডজন খানেক তরুণী হেঁটে যাচ্ছেন। কিছুটা কল্পনার রাজ্যের মতো। বাদ যায়নি ছেলেদের পোশাকও, কেউ পাঞ্জাবি, কেউ শেরওয়ানি। এ যেন এক আনন্দের উৎসব!

সিডনি সব সময় এক আনন্দের নগরী, তবে ১৭ অক্টোবরের সন্ধ্যাটা ছিল তার চেয়েও বেশি।

কারো গায়ে ছিল লাল-সবুজের ফতুয়া, বুকের মাঝখানে লেখা বাংলাদেশ। সিডনি প্রবাসী শিক্ষার্থীদের কাছে বাংলাদেশ মানে এক আবেগের নাম। বাংলা গান, বাংলা খাবার আর বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করে হাজারো শিক্ষার্থী প্রতি বছর ছুটে আসে এখানে।

তেমনই একজন বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থী ফেরদোসী। বৃত্তি নিয়ে পড়তে এসেছেন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে। দেখতে কিছুটা শ্রীলঙ্কানদের মতো। বাংলাদেশি একজন ছাত্র তাঁকে ভিন দেশি মনে করে ধরলেন একটি দেশি গানের সুর। তখনি ফেরদোসী চিৎকার করে বললেন, গত কয়েকদিন মন খুলে বাংলা বলতে পারি না। আপনি গান ধরেন আর আমি নাচি।

বাঙালি মেয়েদের স্বভাবত আবেগ বেশি। ফেরদৌসী নাচতে শুরু করলেন, নাচার ফাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন আপনার কী নাম? অপর পাশ থেকে উত্তর, ফেরদৌস।

যেন মানিকে রতন পেল? কী মিল। একজন ফেরদোসী। আর অন্য জন ফেরদৌস।

দুজনেই গবেষণা করতে অস্ট্রেলিয়া এসেছেন, সেখান থেকে শুরু হয়েছে তাঁদের গবেষণার যাত্রা!

বাস্তব জীবনের এমন কাহিনী নিয়ে মঞ্চ কাঁপাচ্ছেন সিডনি ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। যেখানে শামিল হয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্টজনরা। সেদিন ছিল সেই বিখ্যাত কালচারাল নাইট! বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় সিডনি ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংগঠন সিডনি ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (সুবসা) বাংলাদেশ কালচারাল নাইট ২০১৭।

সুবসার সভাপতি অনুপ রায় শুভেচ্ছা বক্তব্য শুরু করলে ম্যানিং হাউসের পুরো মিলনায়তনে নেমে আসে নিস্তব্ধতা। আবেগ আর ভালোবাসা দিয়ে অনুপম রায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী ও বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সব শহীদের প্রতি !

প্রথমে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান এনটিভি অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদ শ্রাবণকে। তারপর আমন্ত্রণ জানানো হয় বিদেশ বাংলা টুয়েন্টিফোর ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক, সিডনি প্রেস ও মিডিয়া কাউন্সিলের সভাপতি, সুবসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. এনামুল হককে।

পুরো অনুষ্ঠানকে সাজানো হয় বাংলাদেশকে ধারণ করে। সিডনি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন ইশফাক ইলিয়াস, আল সিয়াম সিদ্দিকি, নুসরাত জাহান, হুমায়রা রশিদ নিশা, ফাতেমা জোহরা আদিবা, অর্ণব গুপ্তা, আশরাফুর রহমান, ফাহিম হাসান, নাহিয়ান আল হাসান, রাফেদ আবরার সিদ্দিকি, সানজিদ মোহাম্মদ হামিম, ফাবাসির খান, তাসমিয়া নিটোল, ফারহান আশিক, শেনিন ফাইজাহ, জেউ বিশ্বাস, ফারাহ দিবা, মারিয়া ফেরদৌসী ও সামিরা তাসনিম।

সুবসার সাবেক সভাপতি সুসান ফেরদৌস এনটিভিকে বলেন, ‘আমি আজকে সত্যিই আনন্দিত যে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এবং বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় অংশগ্রহণ করেছেন। ভবিষ্যতে আমরা একসাথে কাজ করার পাশাপাশি এই সংগঠনটিকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তুলব।’