নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ৬১৪তম পর্বে জুমার খুতবা বাংলায় দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে পাবনা থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন আনিছুর রহমান। অনুলিখন করেছেন জান্নাত আরা পাপিয়া।

প্রশ্ন : জুমার সালাতে খুতবা কি বাংলায় দেওয়া যায়?

উত্তর : আমরা জানি, জুমার খুতবা মূলত ওয়াজ বা উপদেশ। রাসুল (সা.) সালাতের আগে খুতবা এই জন্য প্রবর্তন করেছেন, যাতে করে পুরো সপ্তাহে মুসলিমগণ এই খুতবার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং হেদায়েত গ্রহণ করতে পারেন। এর গুরুত্ব ও মর্যাদা যাতে আমরা বুঝতে পারি এই জন্য আল্লাহ বলেছেন, ‘যখন জুমার দিনে আজান দেওয়া হবে, তখন তোমরা আল্লাহর জিকিরের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও।’ এটাকে আল্লাহ তাঁর জিকির হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহর জিকির এটা তখনই হবে, যখন এর মাধ্যমে বান্দা উপদেশ গ্রহণ করতে পারবে।

সমস্ত ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে জুমার খুতবা উপদেশ হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। এখন এই উপদেশ যদি আপনি কাউকে দেন আর এই উপদেশ থেকে কেউ কিছুই বুঝতে পারল না, তাহলে উপদেশের যে উদ্দেশ্য আছে, সেটা এর মাধ্যমে হাসিল হলো না। যেসব বন্ধুরা এই বক্তব্যটুকু উপলব্ধি করতে পারেননি, তারাই আন্দাজের ওপর ফতোয়া দিচ্ছেন।

রাসুল (সা.) যে খুতবাতুল হাজাহ বলেছেন, এই খুতবাতুল হাজাহ তিনি পড়বেন অথবা আরবিতে আল্লাহর প্রশংসা করবেন, তারপর তিনি তাদের আল্লাহর তাকওয়ার উপদেশ দেবেন। এরপর তিনি কোরআন ও হাদিসের যে বিষয় আলোচনা করবেন, ঠিক সেই আলোচনাটুকু লোকদের বুঝিয়ে দেবেন। এটাই হচ্ছে খুতবা।

আমাদের যে বন্ধুগণ জুমার খুতবা পেশ করে থাকেন, তাদের অনেকেরই খুতবা সম্পর্কে ধারণা নেই। এর উদ্দেশ্য কী এবং কেন রাসুল (সা.) ইসলামী শরিয়তের মধ্যে জুমার খুতবা প্রবর্তন করেছেন, এটা বুঝতে হবে।