আপনার জিজ্ঞাসা

মানুষের পক্ষে কি গায়েবি বিষয় জানা সম্ভব?

Looks like you've blocked notifications!

নামাজ,রোজা,হজ,জাকাত,পরিবার,সমাজসহ জীবন ঘনিষ্ঠ ইসলাম বিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড.মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫২৭তম পর্বে দুনিয়ার কোনো মানুষের পক্ষে গায়েবি বিষয় জানা সম্ভব কিনা, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চট্টগ্রাম থেকে টেলিফোন করেছেন মাসুদ। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : গায়েবের মালিক তো একমাত্র আল্লাহ। অনেক সময় বিভিন্ন লোক বিভিন্নভাবে দাবি করেন যে তাঁরা গায়েব জানেন। এই বিষয়টি নিয়ে আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই। একটু বুঝিয়ে বলবেন?

উত্তর : আল্লাহ সুবহানাহুতায়ালা কোরআনে কারিমের মধ্যে এরশাদ করেন, ‘আল্লাহ ছাড়া পাঁচটি জিনিস কেউ জানে না’। তার মধ্যে একটি হচ্ছে গায়েবের বিষয়টি। এই একটি নাম আল্লাহরাব্বুল আলামিন কোরআনে কারিমে একাধিকবার ব্যবহার করেছেন, ‘তিনি অদৃশ্য এবং দৃশ্যের জ্ঞানী’। দুনিয়ার সবাই দৃশ্যমান যে বিষয়গুলো আছে, যেগুলো মানুষ দেখতে পায়, সেগুলোর জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। কিন্তু আল্লাহতায়ালা দৃশ্যমান অদৃশ্যমান সব বিষয়ের সম্পর্কে জানেন। এটি আল্লাহ তায়ালার রবিয়তের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য। সুতরাং কেউ যদি এই দাবী করে, এই কথা বলে যে, আমি গায়েব সম্পর্কে জানি, তাহলে সে ব্যক্তি সবচেয়ে বড় তাগুদ এবং আল্লাহরাব্বুল আলামিনের রবিয়তের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছে। যেটি ইতিপূর্বে কোনো ধরণের কাফের ব্যক্তিও করে নাই এমনকি ফেরাউন পর্যন্তও করে নাই। আল্লাহতায়ালার রবিয়তের সাথে এই ধরণের বেয়াদবি করা অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ।

গায়েবের বিষয়টি রাসুল (সা.) স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, ‘আপনি বলে দেন, আমি গায়েব সম্পর্কে কিছুই জানি না’। কোরআনের মাধ্যমে আল্লাহ নবি (সা.)কে স্পষ্ট করে এই বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। সূরা আরাফের মধ্যে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যদি আমি গায়েব সম্পর্কে জানতাম, তাহলে কোনোভাবেই কোনো অনিষ্ট, কোনো ক্ষতি, কোনো সমস্যা, কোনো সংকট আমাকে পেত না।’ অথচ আল্লাহর নবি (সা.) তায়েফের ময়দানে রক্তাক্ত অবস্থায় বেহুশ হয়ে গিয়েছিলেন। ওহুদের ময়দানে মাথার হেলমেট নবির (সা.) মাথায় ঢুকে গিয়েছিল, নবির সামনের দুই দাঁত শহিদ হয়ে গিয়েছিল। এই গুজব চারিদিকে ছড়িয়ে গিয়েছিল, নবি (সা.) নিহত হয়ে গিয়েছেন।

যারা এই গায়েবের বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে তাঁরা যে ভিত্তির ওপর এই বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন সেটি হল, আল্লাহরাব্বুল আলামিন নবিকে (সা.) কিছু বিষয় সম্পর্কে এলম দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা যেটি জানিয়েছেন, সেটি গায়েবি নয়। জানিয়ে দেওয়ার পরে তো সেটি আর গায়েব থাকবে না। যেমন : নবিকে (সা.) জান্নাত, জাহান্নাম দেখানো হয়েছে, দশজন সাহাবির সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এগুলো গায়েব নয়, এগুলো নবিকে জানানো হয়েছে। জানানোর পরে কোনো বিষয় আর গায়েব থাকে না। এটিই মূলত বড় বিভ্রান্তি।