আপনার জিজ্ঞাসা

স্বামীর সঙ্গে ওয়াদা ভঙ্গ করলে কি রোজা করতে হবে?

Looks like you've blocked notifications!

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ১৭২৪তম পর্বে চিঠির মাধ্যমে ওয়াদা ভঙ্গ করার কাফফারা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোন। প্রশ্নোত্তরের অনুলিখনে ছিলেন মুন্সী আব্দুল কাদির।

প্রশ্ন : অনেকবার আমার স্বামীকে বলেছি, এ রকম কথা আর তোমাকে বলব না। কিন্তু তারপরও বলে ফেলেছি। আবার বলেছি, আল্লাহ, এ রকম কাজ আর কোনোদিন করব না। তার পরও করা হয়েছে। এতে কি আমার ওয়াদা ভঙ্গ হয়েছে? ওয়াদা ভঙ্গ করলে তিনটা রোজা করে দিতে হয়। আমাকে কি রোজা করে দিতে হবে? আর তা করতে হলে কতগুলো রোজা করতে হবে?

উত্তর : এখানে বোন যে কারণে প্রশ্নটি করেছেন, সেটা হলো, তিনি অনেকবার ওয়াদা খেলাফ করেছেন। ওয়াদা খেলাফ করার বিষয়টি মূলত নৈতিক অবক্ষয় এবং জঘন্যতম অপরাধ। রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিসের মধ্যে বলেছেন, ‘আয়াতুল মুনাফেকে সালাস’ অর্থাৎ মুনাফেকের নিদর্শন হচ্ছে তিনটি। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ওয়াদা খেলাফ। মোনাফেক কোনো ওয়াদা করলে, তা খেলাফ করে। সুতরাং ওয়াদা খেলাফ করা কিন্তু জঘন্যতম অন্যায়-অপরাধ। এবং এটি মুনাফেকের লক্ষণ। সুতরাং আপনি বারবার একটি কাজ করবেন না বলছেন, আবার করছেন। এর অর্থ আপনি শুধুমাত্র মৌখিকভাবে এ ওয়াদাটুকু করছেন কিন্তু এর জন্য অন্তরের যে উপলব্ধি দরকার, সংকল্প দরকার, সেটি আপনার আসছে না। সুতরাং যতদিন পর্যন্ত সংকল্প না আসবে ততদিন পর্যন্ত আপনার এ ওয়াদাটুকু শুধুমাত্র একটি মৌখিক ওয়াদা। এর মাধ্যমে আপনি কার্যত কোনো ফল পাবেন না। এবং এর জন্য আপনি গুনাহগার হবেন। যেহেতু এ কাজের মাধ্যমে আপনি অন্যকে প্রতারিত করছেন এবং নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সুতরাং এটি গুনাহর কাজ সেটি খেয়াল রাখতে হবে। বাকি আপনি নিজেও একটি ফতোয়া দিয়েছেন, যে ফতোয়াটি আপনার দেওয়ার প্রয়োজন নেই। সেটা হচ্ছে, এর জন্য তিনদিনের সিয়াম পালন করা।

না। এ ধরনের ওয়াদা ভঙ্গ যদি কেউ করে থাকেন, তাহলে তিনি গুনাহগার হবেন। তার এই কাজটি কবিরা গুনাহ হবে, ওয়াদা খেলাফ করার কারণে। কিন্তু তার জন্য তিনদিনের রোজা রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ এটি কসম নয়। অর্থাৎ এটি কসমের পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়নি।  

কসমের জন্য শর্ত হচ্ছে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নামে যদি কেউ ওয়াদা করে থাকেন এবং সেটি যদি ভঙ্গ করেন, তাহলেই কেবল কসমের যে কাফফারা আছে, সেটি তিনি আদায় করবেন। তবে বোনের এ ওয়াদা কসম নয়, অর্থাৎ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নামে তিনি ওয়াদা করেননি। কসম হতে হলে আল্লাহর নামে কসম করছেন বলে উল্লেখ করতে হবে। এ জন্য বোনকে সিয়াম পালন করতে হবে না। তবে অবশ্যই তওবা করার প্রয়োজন রয়েছে এবং নিজেকে সংশোধন করে এ কাজ থেকে ফিরে আসা দরকার, যেহেতু এটি বড় ধরনের ওয়াদা খেলাফের কাজ।

প্রশ্ন : জন্মনিয়ন্ত্রণ করার জন্য যদি কপার টি করতে হয়, আর সেটি ভেতরে থাকা অবস্থায় যদি কারো মৃত্যু হয়, তাহলে কি সেটা বের করে দাফন করতে হবে?

উত্তর : না। এটি বের করার কোনো প্রয়োজন নেই। যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় তাকে দাফন করতে হবে।

প্রশ্ন : প্রতি মাসে যে তিনটা নফল রোজা আছে, সেগুলোর সময় যদি পিরিয়ড হয়, তাহলে কবে করতে হবে?

উত্তর : যদি পিরিয়ড হয়ে যায় তাহলে এ সময়ে তিনি রোজা পালন করবেন না। তিনি চেষ্টা করবেন সপ্তাহের যে দুদিনের সিয়াম রয়েছে, সোমবার এবং বৃহস্পতিবার, সে সুন্নাতটুকু পালন করার জন্য। যেহেতু এই দুদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) সিয়াম পালন করেছেন এবং সিয়াম পালন করতে রাসুল (সা.) উদ্বুদ্ধ করেছেন সেহেতু এটাও সুন্নাহ।