১০ মহররম

ত্যাগের মহিমায় শোকের মিছিল

Looks like you've blocked notifications!
বরাবরের মতো এবারও পুরান ঢাকার হোসেনী দালান থেকে বের করা হয় তাজিয়া মিছিল। ছবি : এনটিভি

আজ পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য আর শোকে পালন করা হচ্ছে দিনটি। বরাবরের মতো এবারও পুরান ঢাকার হোসেনী দালান থেকে বের করা হয় তাজিয়া মিছিল। এ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের শোকে এই মাতম। হিজরি ৬১ সনের ১০ মহরম সত্যের পক্ষে লড়াই করতে গিয়ে কারবালার মরুপ্রান্তরে পরিবার-পরিজনসহ শহীদ হন তিনি। মুসলমানদের জন্য শোক এবং আত্মত্যাগের অনন্য দৃষ্টান্ত কারাবালার এই নৃশংস ঘটনা। হত্যাকারীদের প্রতি ঘৃণা আর কারবালার শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতেই শিয়া সম্প্রদায়ের এই মিছিল।

মিছিল অংশগ্রহণকারী এক বৃদ্ধ (৬০) বলেন, ‘এই মহররমের ১০ তারিখে হজরত হোসেনের পুরা পরিবারে এজিদের সৈন্য বাহিনী ধ্বংস কইরা দিছে। তাঁর উদ্দেশে এই (শোক) আমরার পূর্বপুরুষরা কইরা আইছি, আর আইজকাও করতাছি। এইটা হইছে মঞ্জিল।’

আরেকজন (৪৫) বলেন, ‘আপামর মুসলমানরা আমরা এই দিনটাকে গভীর শোক নিয়ে স্মরণ করি।’

রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত হোসেনী দালান বা ইমামবাড়া থেকে সকাল ১০টায় সবচেয়ে বড় তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। অংশ নেন সব বয়সের নারী-পুরুষ। তাজিয়া মিছিল নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

তাজিয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারী এক নারী (৪০) বলেন, ‘সবচেয়ে বড় ইবাদত হইতেছে আল্লাহপাকের কাছে, সে ইবাদতটাই আমরা করে থাকি।’

এক কিশোর (১৮) বলে, ‘নিয়ত করছিলাম যে আমরা এই মহররমে খালি পায়ে মিছিল নিয়ে যাব।’

আরেক কিশোরী (১৬) জানায়, ‘আমরা ছোট থেকে এইখানে আসি, আমাদের মামারা আসে, নানারা আসে, আমাদের সবাই আসে, এমনকি আমার আম্মুও আসে, এইখানে আমার মানত আছে, আমার পড়াশোনার আছে, আমার ভাইয়ের আছে, আমার বাবার জন্য আসছি।’

একজন বয়স্ক ব্যক্তি (৬০) বলেন, ‘সম্মান দেখাইতেছি যে, আমাদের নবীসাব যে ছিলেন, উনার যে সামনে যাব আমরা, এই জুতা নিয়া যাবে, হবে?’

এ ছাড়া সকালে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ থেকে আরো একটি তাজিয়া মিছিল বের করা হয়, বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে মিছিলটি শেষ হয় তেজগাঁওয়ের ইমামবাড়ায়।

আয়োজকদের একজন বলেন, ‘এটা হচ্ছে মেসেজ, এই মেসেজটা সারা পৃথিবীর, নট অনলি মুসলমান… সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যে, হক এবং বাতিলের যুদ্ধ হয়েছিল, হক জয়যুক্ত হয়েছে।’

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মনে করেন, পবিত্র আশুরার আত্মত্যাগের আদর্শ সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার প্রেরণা জোগায়।