আপনার জিজ্ঞাসা

বান্দার বিপদ আল্লাহর পরীক্ষা নাকি গজব?

Looks like you've blocked notifications!

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ২১৮৬তম পর্বে বিপদ-আপদ বান্দার জন্য পরীক্ষা নাকি আল্লাহর গজব, সে সম্পর্কে খাগড়াছড়ি থেকে ই-মেইলে জানতে চেয়েছেন মো. মিজানুর রহমান। অনুলিখন করেছেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন :  আল্লাহ তার বান্দাকে বিপদ-আপদ দিয়ে পরীক্ষা করেন, কিন্তু ওই বিপদ কি তার জন্য পরীক্ষা নাকি আল্লাহর গজব, এটা কীভাবে বুঝব?  

উত্তর : বান্দা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সব সময়ই বান্দা, গোলাম। তাই যদি কোনো কারণে আল্লাহর বান্দা কোনো পরিস্থিতির শিকার হন, কোনো বিপদ-আপদের মুখোমুখি হন, তাহলে সর্বপ্রথম বান্দা নিজের ত্রুটিকে বড় করে দেখবেন, গুরুত্ব দেবেন।

বান্দার সর্বপ্রথম উপলব্ধি হবে যে, আমার হয়তো এমন বড় কোনো অপরাধ হয়ে গিয়েছে, যেখানে আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টি আমার ওপর আসতে পারে। এ জন্যই বান্দাকে আল্লাহতায়ালা কাছে প্রত্যাবর্তনের কথা বলা হয়েছে, ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে, তওবা করার কথা বলা হয়েছে। যদি কোনো কারণে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অসন্তুষ্ট হন অথবা আল্লাহর ক্রোধ যদি তার ওপর আসে, আল্লাহ যেন মেহেরবানি করে তাকে ক্ষমা করে দেন, এটা বান্দার উপলব্ধির মধ্যে থাকবে। বান্দা সব সময় খেয়াল রাখবে যে হতে পারে আল্লাহর পক্ষ থেকে এটি আজাব বা শাস্তি।

যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি হয়ে থাকে, তাহলে এটি বান্দার জন্য সহজ। সারফে সালেহিনরা এটি বলতেন যে, বান্দার জন্য শাস্তিটা হচ্ছে সহজ। কারণ, অপরাধ করার পর আল্লাহতায়ালা যদি বান্দাদের শাস্তি দিয়ে দেন, তাহলে পরবর্তী সময়ে এই শাস্তির পরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তার নাজাতের পথ সুগম হয়ে যায়। সে নাজাতের পথ পেয়ে যান। কারণ সে অপরাধের শাস্তি পেয়ে গিয়েছেন।

কিন্তু শাস্তি না দিয়ে যদি আল্লাহ অপরাধী, পাপে লিপ্ত এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টিতে লিপ্ত ব্যক্তিকে যদি আল্লাহ ছেড়ে দেন, তাহলে এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহ তাকে অবকাশ দিচ্ছেন এবং কঠিন শাস্তি, আজাবের দিকে, কঠিন পরিস্থিতের দিকে সে ধাবিত হচ্ছে। এটি বান্দার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর এবং ভয়ংকর। তাই এখানে বান্দার জন্য একটি আশঙ্কা থেকে যাবে।

এ ক্ষেত্রে শাস্তিটা বান্দার জন্য সবচেয়ে সহজ। যদি শাস্তি হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার কাছে বান্দা প্রত্যাবর্তন করবে এবং ফিরে আসবে।

একই জিনিস বান্দার জন্য পরীক্ষাও হতে পারে। যদি পরীক্ষা হয়ে থাকে, তাহলে বান্দা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে চাইবে যে আল্লাহ যদি এই কাজটি আমার জন্য পরীক্ষা হয়, তাহলে আমাকে পরীক্ষায় সত্যিকারভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য সবর, এখতিয়ার করা দরকার। বান্দা বারবার চাইবে যে, আল্লাহ এই পরীক্ষায় যেন আমার বিচ্যুতি না ঘটে।

কোনটা বান্দার জন্য আজাব ও কোনটা পরীক্ষা, সেটি বান্দা উপলব্ধি করতে পারবে। বান্দা যখন সত্যিকারভাবেই আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে পারবে, তখন যদি এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব হয়ে থাকে, তাহলে আল্লাহতায়ালা মেহেরবানি করে তাকে ক্ষমা করে দেবেন। তওবার পরে আল্লাহ বান্দাদের আর শাস্তি দেন না, ক্ষমা করে দেন।