কারবালার প্রান্তর

ইমাম হোসাইন (রা.)-এর শেষ উচ্চারণ

Looks like you've blocked notifications!

কারবালার প্রান্তরে যখন সবাই শাহাদাত বরণ করছেন এবং ইমাম হোসাইন (রা.) কেবল একা দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন তাঁর শেষ কয়টি কথার কিছু অংশের অনুবাদ :

‘কেন আমাকে হত্যা করতে চাও?
আমি কি কোনো পাপ অথবা অপরাধ করেছি?’

এজিদের সৈন্য বাহিনী বোবার মতো দাঁড়িয়ে রইল। পুনরায় ইমাম হোসাইন(রা.) বললেন,

‘আমাকে হত্যা করলে আল্লাহর কাছে কী জবাব দেবে?
কী জবাব দেবে বিচার দিবসে মহানবীর কাছে?’

এজিদের সৈন্য বাহিনী পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। আবার ইমাম হোসাইন (রা.) বললেন,

‘হাল্ মিন্ নাস্রিন ইয়ানসুরুনা?’
‘আমাদের সাহায্য করার মতো কি তোমাদের মাঝে একজনও নাই?’

তারপরের আহ্বানটি সাংঘাতিক মারাত্মক। ঐতিহাসিকদের মতে এটাই ইমাম হোসাইন(রা.) শেষ আহ্বান ছিল।

‘আলাম তাস্মাও? আলাইসা ফিকুম মুসলিমু?’
‘আমার কথা কি শুনতে পাও না? তোমাদের মাঝে কি মাত্র একটি মুসলমানও নাই?’

কেউই এই পবিত্র আত্মার কথার কোনো জবাব দিতে পারল না। সমস্ত কারবালা নীরব-নিস্তব্ধ হয়ে গেল । এবার যারা ইমাম হোসাইন (রা.) কে চিঠি লিখে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাদের কয়েকজনের নাম ধরে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন-

‘হে শাবস ইবনে রাবয়ী! হে হাজর ইবনে আবজার!
হে কায়েস বিন আশআস! হে ইয়াজিদ ইবনে হারেস!
হে জায়েদ ইবনে হারেস! হে আমর ইবনে হাজ্জাজ!
... তোমরা কি চিঠি লিখে আমাকে আমন্ত্রণ জানাও নি?
তোমরা কি আমাকে কুফায় আসার জন্য বারবার চিঠি লিখে অনুরোধ করোনি?
তোমরা কি চিঠিপত্র ও দূত পাঠিয়ে বলোনি যে, আমাদের কোনো ইমাম নেই, আপনি আমাদের মাঝে তাশরিফ আনুন এবং আপনার মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালা হয়তো আমাদের সঠিক নির্দেশনা দেবেন। তোমরা এও লিখেছিলে যে, যাদের অধিকার না থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতা দাবি করে এবং অন্যায় আচরণ করে, তাদের চাইতে ইসলামী শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আহলে বাইত-ই অধিকযোগ্য (বেশি হক্বদার)।’

তথ্যসূত্র :

১. ইবনে আসীর, ৪খণ্ড, পৃ. ২৫ ।

২. ত্বাবারি, ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃ. ২৪৩।

৩. হাসান ও হুসাইনের কারবালার কাহিনী ও এজিদ বধ পর্ব, পৃষ্ঠা-৬৭-৭০ ।

৪. দুই ইমাম দুই ফুল, পৃ.১২৩-১২৫ ।

৫. শামে কারবালা, পৃ. ১২৫-১২৭।

৬. আহলে বাইত ও কারবালা, পৃ. ৪৪-৪৫ ।

৭. কিতাবুল ইরশাদ : শেখ মুফিদ, ২য় খণ্ড, পৃ. ৯৭ ।

. মাকতালুল হুসাইন : খারাজমী, ২য় খণ্ড, পৃ. ৬।