আপনার জিজ্ঞাসা

বদলি হজ কারা করতে পারবেন?

Looks like you've blocked notifications!

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ১৭৪৪তম পর্বে মিজান ও মুহাম্মদ আলী দোহা, কাতার থেকে ই-মেইলে শারীরিক অসুস্থতার সময় বদলি হজের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। অনুলিখনে ছিলেন সজীব খান।

প্রশ্ন : আমার বয়স ৪৫। যথেষ্ট ইচ্ছা ও আগ্রহ আছে ওমরাহ হজ করার। কিন্তু শারীরিক একটা সমস্যার কারণে যেতে সাহস পাচ্ছি না। সমস্যাটা হলো, আমি মানুষের ভিড়ের মধ্যে যেতে পারি না। গেলে আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। নিশ্বাস নিতে পারি না। এ অবস্থায় আমার জন্য কি হজ ফরজ? বা আমার কী করা উচিত? আমার পরিবর্তে অন্য কোনো গরিব মানুষকে পাঠানো যাবে কি? অথবা হজে যাওয়ার টাকাগুলো গরিব অসহায় কোনো মুসলমানকে দান করলে হজের সওয়াব পাওয়া যাবে কি?

উত্তর : ইচ্ছাও আছে, সমর্থও আছে; কিন্তু তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। না, নিশ্বাস তো বন্ধ হবে না। নিশ্বাস বন্ধ হওয়া, এটা একটা মানসিকও হতে পারে অথবা শারীরিক কোনো কারণে হতে পারে। সেটা ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন। কোরআনে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেছেন, আল্লাহতায়ালার জন্য মানুষের হক হচ্ছে তারা আল্লাহর ঘরে হজ করবে। যদি আল্লাহর ঘরে পৌঁছার সমর্থ রাখেন বা আপনার শারীরিক অবস্থা সফর করার মতো আছে, তাহলে আপনি হজ করতে পারেন। কোনো অসুবিধা নেই। আপনি ভিড়ের মধ্যে যাবেন না। আপনি হজে যাবেন, এটা হলো মূল কথা এবং আপনার জন্য হজ ফরজ। সুতরাং সে ক্ষেত্রে হজের এ টাকা কোনো ফকির-মিসকিনকে অথবা কোনো গরিবকে অথবা কোনো মাদ্রাসায় অথবা অন্য কোথাও যদি আপনি দান করেন, তাহলে কিন্তু আপনি হজের যে সওয়াব আছে সে সোয়াব আদায় করলেন না এক, দ্বিতীয় হচ্ছে হজের যে ফরজিয়ত, হজ আপনার জন্য ফরজ হয়েছে, সেই ফরজ আদায় হবে না। তিন নম্বর হচ্ছে, হজ ত্যাগ করার কারণে বা ইসলামের অন্যতম পঞ্চম স্তম্ভ পরিহার করার কারণে যে গোনাহ রয়েছে, তা থেকে আপনি রেহাই পাবেন না। এ জন্য দান করলে আপনি দানের সোয়াব পাবেন, সেটা ভিন্ন কথা; কিন্তু হজের টাকা গরিব-মিসকিনদের দিয়ে এই কাজটি আপনি আদায় করতে পারবেন না। তাই উত্তম হচ্ছে, আপনার নিজে হজ করা। তার পরও ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে। যে কাজ যেখানে যেভাবে করা উচিত, সেখানে সে কাজ সেভাবে করাই উচিত। যদি নিজেরা কোনো কিছু না জানি, তাহলে যারা জানে তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে। সুতরাং যে বিষয়ে আপনার কনফিউশন আছে, সেখানে ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞেস করবেন। যদি আপনি ডাক্তারকে বলেন, আমি হজে যেতে চাই এবং আমার শারীরিক সেই ফিটনেস আছে কি না। ডাক্তার যদি বলেন, আপনি এভাবে যেতে পারবেন না, তাহলে আপনি আপনার পক্ষ থেকে একজন লোককে বদলি হজে পাঠাবেন। যাকে পাঠাবেন, তার কিন্তু নিজের পক্ষ থেকে আগে হজ করে নিতে হবে। এমন লোককে পাঠাবেন না, যিনি আগে তার পক্ষ থেকে হজ করেননি। কারণ, এ ব্যক্তির বদলি হজ জায়েজ নেই। তাই নিজেরটাও হবে না, যার পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে তারটাও হবে না। কারণ, হজের জন্য তার যে যোগ্যতা, তা তার নেই। এ জন্য নিজের পক্ষ থেকেও করেনি, আরেকজনের জন্যও তার নিয়তটা শুদ্ধ হয়নি। সে ক্ষেত্রে আপনার হজ করাবেন, মানে একজন ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে হজ করাবেন, তিনি এমনি টাকা খরচ করে ফেলবেন, কিন্তু এমন নয়। হজ আপনার পক্ষ থেকে তিনি আদায় করবেন, যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে আপনার হজ আদায় হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, যদি ফরজ হজ হয় সেটা যদি নিজের সামর্থ্য থাকে নিছক সামান্য কিছু অসুবিধার জন্য যদি ত্যাগ করেন, তাহলে সেটা শুদ্ধ নয়। সবচেয়ে উত্তম ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ করে নেওয়া।