আপনার জিজ্ঞাসা

কোন নামাজ শেষে রাসুল (সা.) ঘুরে বসতেন?

Looks like you've blocked notifications!

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ১৭৫৫তম পর্বে ই-মেইলে নামাজ শেষে মুসল্লিদের দিকে ইমামের ঘুরে বসার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন এ কে এম সাজেদুল ইসলাম। অনুলিখনে ছিলেন মুন্সী আবদুল কাদির।

প্রশ্ন : রাসুল (সা.) কি সব ফরজ সালাতের পর মুসল্লিদের দিকে ঘুরে বসতেন? নাকি শুধু ফজর ও আসর সালাতের পর?

উত্তর : রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সালাতের পরই মুসল্লিদের দিকে ঘুরে বসতেন। এ মর্মে রাসুল (সা.)-এর সহিহ বর্ণনা পাওয়া যায়, ‘ইজান ছরাফান হারফ’। যখন রাসুল (সা.) সালাতের সালাম ফেরাতেন, তারপর রাসুল (সা.) ফিরে বসতেন। অন্য হাদিসের মধ্যে এসেছে, রাসুল (সা.) যখন সালাম ফেরাতেন, তখন তিনি আমাদের দিকে মুখ করে বসতেন। এটি শুধুমাত্র ফজর অথবা আসর সালাতের পর নয়।

শুধুমাত্র ফজর এবং আসরের সালাতের পর ইমামের ঘুরে বসাটা আমাদের নিজস্ব ইজতেহাদ। রাসুল (সা.) প্রতিটি সালাতেই মূলত সালাম ফেরানোর পরে মুসল্লিদের দিক মুখ করে বসতেন। তারপরে আসকার যেগুলো আছে সেগুলো রাসুল (সা.) পড়েছেন। সাহাবিদের রেওয়াতের মাধ্যমে তা সাব্যস্ত হয়েছে।

আমরা অনেকে এ সুন্নাহ সম্পর্কে জানি না। ফলে দেখা যায় যে, ইমাম সাহেব যেভাবে সালাম ফিরিয়েছেন, সেভাবে বসে থাকলেন। এ ক্ষেত্রে রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ লঙ্ঘন করলেন। আবার দেখা যায় যে, তিনি মোনাজাত করতেছেন। আসলে তিনি রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ সম্পর্কে অজ্ঞ।

রাসুল (সা.) এখানে কিছু আসকার দিয়েছেন। এখানে রাসুল (সা.) এমন কোনো দোয়া করেননি বা দেননি যে ইমাম সাহেব সেখানে হাত তুলে দোয়া করতে হবে। এটা রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি। আবার দেখা গেল যে তিনি কিবলামুখী হয়ে দোয়া করতেছেন। এটা রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহ দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি। এর কারণ হচ্ছে মূলত আমরা সুন্নাহর অনুশীলন করি না, সুন্নাহ সম্পর্কে জানি না। বরঞ্চ আমরা নিজেরা নেজেদের ইচ্ছামতো দ্বীন তৈরি করে নিয়ে চেষ্টা করি আমাদের দ্বীন পালন করার জন্য। আমাদের বানানো দ্বীনের মধ্যে কোনো ফায়দা নেই। এর মধ্যে সওয়াব নেই। বরং বেদাত হওয়ার কারণে এটি আল্লাহতায়ালার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ এবাদত আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

রাসুল (সা.)-এর একাধিক সহিহ হাদিস দ্বারা এটি সাব্যস্ত হয়েছে। এমনকি আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসের মধ্যে এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এতটুকু দেরি করতেন না যে, আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম … ওয়াল ইকরম, পড়া পর্যন্ত এতটুকু দেরি করতেন, এর বেশি দেরি করতেন না। এর পর তিনি মুসল্লিদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বসতেন।’