বিশ্ব ইজতেমায় জুমার নামাজে লাখো মানুষের ঢল

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন আজ শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেন লাখ লাখ মুসল্লি। ছবি : নিউজ রুম ফটো

গাজীপুরের টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন আজ শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করেন লাখ লাখ মুসল্লি। এতে ইজতেমা প্রাঙ্গণে অবস্থান নেওয়া ১৬ জেলার তাবলিগ জামাতের সাথি ছাড়াও ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লক্ষাধিক মুসল্লি অংশ নেন।

দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে জুমার জামাত শুরু হয়। নামাজে ইমামতি করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম তাবলিগ জামাতের অন্যতম মুরব্বি হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের।

এর আগে আজ ভোর থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে ইজতেমা মাঠের দিকে মানুষের ঢল নামে। দুপুর ১২টার দিকে ইজতেমা মাঠ উপচে আশপাশের খোলা জায়গাসহ সব স্থান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। মাঠে স্থান না পেয়ে মুসল্লিরা মহাসড়ক ও অলি-গলিসহ যে যেখানে পেরেছেন হোগলা পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ বিছিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বেশ কিছুক্ষণের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নামাজ শেষে একজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে আজ ইজতেমায় জুমার নামাজে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী, গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

টঙ্গীর তুরাগতীরে আজ বাদ ফজরে আমবয়ানের মাধ্যমে তিনদিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। ১০ জানুয়ারি (রোববার) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এর সমাপ্তি ঘটবে। চারদিন বিরতির পর ১৫ জানুয়ারি (শুক্রবার) থেকে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। ১৭ জানুয়ারি দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে।

আজ ফজরের নামাজের পর ইমান-আমলের ওপর ভারতের মাওলানা আবদুর রহমান আমবয়ানের মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমার মূল কাজ শুরু হয়। এ বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মুরুব্বি মাওলানা মো. আবদুল মতিন। অন্যান্য বছরের মতো এবারও উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লির উদ্দেশে তাবলিগের ছয় উসুল অর্থাৎ কালেমা, নামাজ, এলেম ও জিকির, একরামুল মুসলিমিন, সহীহ নিয়ত ও তাবলিগ ইত্যাদি বিষয়ে বয়ান করা হবে।

কাল শনিবার বাদ আসর প্রতিবছরের মতো যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন করা হবে বলে ইজতেমা সূত্রে জানা গেছে। এসব বিয়ে বর ও কনেপক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বর ও কনের নাম তালিকাভুক্তি হচ্ছে।

প্রথম দিনে যাঁরা বয়ান করলেন : সকালে বয়ান করেন আবদুর রহমান। জুমার নামাজের পর বাদ আসর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা জোয়াহের ও বাদ মাগরিব দিল্লির মাওলানা সা’দ বয়ান করেন। বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির মুরুব্বি প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

বয়ানে বলা হয়, দুনিয়ার সবচেয়ে মূল্যবান স্থান হলো মসজিদ আর সবচেয়ে কম দামি জায়গা হলো বাজার। যাঁরা মসজিদে নামাজ আদায় করেন, তাঁদের জন্য বেহেশতে মহল তৈরি হয়। যিনি মসজিদকে ভালোবাসেন স্বয়ং আল্লাহতায়ালা তাঁকে ভালোবাসেন। এ দুনিয়ায় যিনি একটি মসজিদ বানাবেন, আল্লাহ তাঁর জন্য পরপারে একটি মহল বানাবেন। জুমার দিন একটি পবিত্র দিন। সবচেয়ে উত্তম দিন হলো জুমার দিন। এটি হলো সবচেয়ে বড় ও সম্মানীয় দিন। এটি দুই ঈদের চেয়েও ফজিলতপূর্ণ। এদিনে হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়। এদিনই দুনিয়া ধ্বংস হবে। এদিনে আল্লাহর কাছে যা চাইবে, আল্লাহ তা তাকে দেবেন। জুমার নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে গোসল-অজু করে মসজিদের উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর থেকে তার নেকি লেখা হয়। আমরা যা করব আল্লাহকে রাজি করার জন্য করব। আল্লাহ পাকের হুকুমমতো আমরা যেন সারা জীবন চলতে পারি সে চেষ্টা করতে হবে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশে ও সারা দুনিয়ায় মানুষের মধ্যে দীন কায়েম করার জন্য ছড়িয়ে পড়তে হবে।

বয়ানের তাৎক্ষণিক অনুবাদ : বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের ১৫-২০ জন শুরা সদস্য ও বুজর্গ বয়ান পেশ করবেন। মূল বয়ান উর্দুতে হলেও বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসি ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদ হচ্ছে। বিদেশি মেহমানরা মূল বয়ান মঞ্চের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বপাশে হোগলা পাটিতে বসেন। বিভিন্ন ভাষাভাষি মুসল্লিরা আলাদা আলাদা বসেন এবং তাঁদের মধ্যে একজন করে মুরুব্বি মূল বয়ানকে তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে শোনান।

হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা : টঙ্গী হাসপাতাল ও সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে চারটি মেডিকেল ক্যাম্পে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত প্রায় দুই হাজার জন মুসল্লি চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে দুজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে এবং প্রায় অর্ধশত জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থদের অধিকাংশই ঠান্ডা, সর্দি, কাশি, আমাশয়, শ্বাসকষ্টের ও হৃদরোগের রোগী বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার খান।

এদিকে টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম এ লতিফ জানান, সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও মুসল্লিদের চিকিৎসাসেবা দিতে ইজতেমা ময়দানে প্রায় অর্ধশত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে কাজ করছে।

ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা : শুক্রবার সকাল থেকে ইজতেমা ময়দানসংলগ্ন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পগুলোতে মুসল্লিদের চিকিৎসা নিতে ভিড় দেখা গেছে। মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ময়দানের আশপাশে ও মন্নুনগর এলাকায় বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি পরিষদ, র‌্যাবের ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প, গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিস, টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, হামদর্দ ওয়াক্ফ, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক কলেজ, হোমিওপ্যাথিক অনুশীলন কেন্দ্র, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি পরিষদ, জাতীয় ইমাম সমিতি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইসলামী মিশন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন। অ্যালোপ্যাথি ছাড়াও মুসল্লিরা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিতে তাঁদের ক্যাম্পে ভিড় করেছেন।

ইজতেমা উপলক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগের ছুটি বাতিল : ইজতেমা উপলক্ষে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সব প্রস্তুতি নিয়েছে। মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ইজতেমায় দায়িত্ব পালনকারী সব চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ছুটি ৬ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার খান। তিনি জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ মেডিকেল অফিসারদের তালিকা ও ডিউটি রোস্টার করা হয়েছে। তিন পালায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ছাড়াও মেডিকেল অফিসাররা ইজতেমা ময়দানে ডিউটি করছেন। এ ছাড়া টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে আরো ৫০টি শয্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ হাসপাতালের উদ্যোগে মন্নুগেট, বাটা গেট ও এটলাস হোন্ডা রোডে মুসল্লিদের তাৎক্ষণিক সেবা দিতে চারটি অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। টঙ্গী হাসপাতালে হৃদরোগ, অ্যাজমা, ট্রমা, বার্ন, চক্ষু এবং ওআরটি কর্নারসহ বিভিন্ন ইউনিটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিচ্ছেন। মুসল্লি রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন রয়েছে।

প্রথম দিনে প্রায় সাত হাজার বিদেশি মুসল্লি : ইজতেমার প্রথম পর্বে আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ইজতেমা মাঠে বিশ্বের অন্তত ১০০টি দেশের প্রায় সাত হাজার জন বিদেশি মুসল্লির আগমন ঘটেছে। এবারের ইজতেমায় বিশ্বের শতাধিক দেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার মুসল্লির আগমন ঘটবে বলে আশা করছেন মুরুব্বিরা। ইজতেমার মুরব্বি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন জানান, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ভারত, পাকিস্তান, এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকার ৯৩টি দেশের প্রায় ছয় হাজার ৭০০ জন মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। আগামী দুদিনে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। বিভিন্ন ভাষা-ভাষী ও মহাদেশ অনুসারে ইজতেমা ময়দানে আগত এসব বিদেশি মেহমানের জন্য তাঁবু নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

বিদেশি তাঁবুতে গ্যাস সংকট : টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে বিদেশি মেহমানদের তাঁবুর অস্থায়ী রন্ধনশালায় ‘গ্যাসের সরবরাহ কম’ বলে জানা গেছে। এ জন্য বিদেশিদের জন্য খাবার রান্নায় বিঘ্ন ঘটছে।

বিদেশি মেহমান তাঁবুতে রান্নার জামাতের জিম্মাদার মো. নুরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল থেকে তাঁদের গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় রান্নায় সমস্যা হচ্ছে। গত দুদিন তেমন সমস্যা না হলেও আজ শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে হঠাৎ গ্যাসের চাপ কমে যায়। ফলে প্রায় সাত হাজার বিদেশি মুসল্লির খাবার তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাসের টঙ্গী (বিক্রয়) কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, তাঁরা বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন।

ইজতেমার মুরুব্বিদের দেওয়া তথ্যমতে, ১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে ইজতেমার আয়োজন শুরু করা হয়। তারপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে ও ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগতীরে বলতে গেলে নিয়মিতই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পরে সরকার তুরাগতীরে ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়। মুসল্লিদের চাপ কমাতে ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ইজতেমাকে দুই পর্বে বিভক্ত করা হয়। ওই বছরই প্রথম দুই দফায় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী বছরগুলোতে এ ধারায় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

এদিকে, মুসল্লিদের সুবিধার্থে গত বুধবার থেকেই বিআরটিসি বিভিন্ন রুটে ২২৮টি স্পেশাল বাস সার্ভিস চালু করেছে। ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এ সার্ভিস অব্যাহত থাকবে বলে বিআরটিসি সূত্রে জানা গেছে। ৬ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলাচলকারী স্পেশাল বাসের মধ্যে তিনটি বাস বিদেশি মুসল্লিদের জন্য সংরক্ষিত থাকছে। আবদুল্লাহপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল ২৯টি বাস, শিববাড়ী-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল ১৩টি, টঙ্গী-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল ১৭টি, গাজীপুর-চৌরাস্তা, মতিঝিল-ভায়া ইজতেমাস্থল ছয়টি, গাবতলী-গাজীপুর ভায়া ইজতেমাস্থল পাঁচটি, গাবতলী-মহাখালী ভায়া ইজতেমাস্থল ৩৫টি, গাজীপুর-মতিঝিল ভায়া ইজতেমাস্থল ২৫টি, মতিঝিল-বাইপাইল ভায়া ইজতেমাস্থল আরো ২০টি বাস চলবে।

এ ছাড়া ঢাকা-নরসিংদী ভায়া ইজতেমাস্থল ২০টি, চট্টগ্রাম রোড-সাভার রোড ২০টি এবং ঢাকা-কুমিল্লা রোডে চলবে আরো ১৫টি বাস।

অন্যদিকে বিশ্ব ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের যাতায়াতে সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে ২৮টি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করবে। পাশাপাশি সব আন্তনগর, মেইল, এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনে অতিরিক্ত ২০টি কোচ সংযোজন করা হয়েছে।

সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের সদস্যরা তুরাগ নদের নয়টি স্থানে (পন্টুন) ভাসমান সেতু নির্মাণ করেছেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ইজতেমা মাঠে স্থাপিত ১২টি নলকূপের মাধ্যমে প্রতিদিন সাড়ে তিন কোটি লিটারের বেশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অজু-গোসলের হাউস, টয়লেটসহ প্রয়োজনীয় স্থানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

ইজতেমা এলাকায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উত্তরা, টঙ্গী সুপার গ্রিড ও টঙ্গী নিউ গ্রিডকে মূল ১৩২ কেভি সোর্স হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। যেকোনো একটি গ্রিড নষ্ট হলেও সামগ্রিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হবে না। ইজতেমা এলাকায় চারটি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর এবং পাঁচটি ট্রলি-মাউন্টেড ট্রান্সফরমারও সংরক্ষণ করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, ইজতেমাস্থলে তাদের একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে সার্বক্ষণিক কর্মকর্তাসহ ফায়ারম্যানরা অবস্থান করবেন। ময়দানের প্রতি খিত্তায় ফায়ার ডিস্টিংগুইসারসহ ফায়ারম্যান, গুদামঘর ও বিদেশি মেহমানখানা এলাকায় তিনটি পানিবাহী গাড়ি, তিন সদস্যের ডুবুরি ইউনিট, একটি স্ট্যান্ডবাই লাইটিং ইউনিট ও পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে।

গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। গতকাল থেকে পাঁচ হাজার পুলিশ সদস্য ইজতেমাস্থলে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছেন। এ ছাড়া সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে।