২০১৬
হাস্যরসের চ্যালেঞ্জিং বছর!
মানুষ হাসানো পৃথিবীর কঠিনতম একটা কাজ। সেটা হোক লিখে কিংবা বলে। যেহেতু হাস্যরস লিখে মানুষ হাসানোর চেষ্টা করে, সে ক্ষেত্রে সেটা কত চ্যালেঞ্জিং, তা সহজে অনুমান করা যায়। তার চেয়ে বড় কথা, এনটিভির হাস্যরস বিভাগটি বাংলাদেশে কোনো টিভি চ্যানেলের অনলাইন পোর্টালের একমাত্র রম্য বিভাগ। বাংলাদেশে অন্য কোনো টিভি চ্যানেলে অনলাইনে রম্য পাতা নেই। সাধারণত বাংলাদেশের অনলাইন পোর্টালগুলোর পাঠক রাজনীতি, খেলাধুলা কিংবা বিনোদন সংবাদে আগ্রহী। সে জন্য সাধারণত রম্য পাতা খুলে ঝুঁকি নিতে চায় না। কিন্তু সবার ধারণা পাল্টে দিয়ে একেবারে স্রোতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এনটিভি অনলাইন শুধু রম্য পাতা ‘হাস্যরস’ বিভাগ চালু করে ক্লান্ত হয়নি, উল্টো সেই রম্যপাতাটিতে সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু কিংবা সমাজের অসংগতি তুলে ধরে নিয়মিত লেখা প্রকাশ করেছে। যার ফলে মাত্র এক বছরের মধ্যেই এখন ‘হাস্যরস’ পাঠক চাহিদার দিক দিয়ে এনটিভির অনলাইন পোর্টালের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। কেননা, দিন শেষে এনটিভির যে কয়টা লেখা সর্বাধিক পঠিত হিসেবে শীর্ষে থাকে, তাতে রম্য পাতা ‘হাস্যরস’ বিভাগ থেকে একটা না একটা লেখা থাকেই। এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে হাস্যরসের প্রতি পাঠকের ভালোবাসা এবং হাস্যরস টিমের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য।
কিন্তু শুরুতেই হাস্যরস এমন ছিল না। কী পরিমাণ হাস্যরসকে স্ট্রাগল করতে হয়েছে, তা হয়তো আপনারা কখনো জানবেন না। হাস্যরসের শুরু থেকেই আমি হাস্যরসে লেখার সুযোগ পেয়েছি। তাই জানি কিছুটা হলেও। দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রথম প্রথম হাস্যরস তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। পাঠক হাস্যরস তেমন পড়ত না। দিন শেষে হাস্যরস বিভাগের নানা রকম সৃজনশীল চিন্তা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। পাঠক তো পড়ছে না লেখা। কী করা যায়? এ রকম কত কী ভাবনা। এর পর ধীরে ধীরে আমাদের অবস্থান তৈরি হলো। লেখকদের তো আইডিয়া আছেই, পাশাপাশি নিত্যনতুন আইডিয়া ক্রিয়েট করে সেই অনুযায়ী লেখা এর পর পাঠক আগ্রহী হয়ে উঠল, পাশাপাশি বেড়ে গেল হাস্যরস টিমের পরিশ্রম এবং লেখকদের দায়বদ্ধতা। কেননা, একজন লেখকের লেখা যখন পাঠক পছন্দের শীর্ষে থাকে, তখন তাঁর অনেক দায়িত্ব বেড়ে যায়। সেটা শুধু লেখকের ক্ষেত্রে নয়, লেখক যে বিভাগে লেখেন, সেই বিভাগীয় পাতাটিরও। তখন শেষ কথা বলতে শুধু পাঠকের চাহিদাই ধরা হয়, অন্য কিছু না।
‘হাস্যরস’ পাঠক চাহিদা কতটুকু পূরণ করেছে, তা সময় বলে দেবে; কিন্তু এই একটা বছর হাস্যরস টিমের আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না। বিভিন্ন বিতর্কের পরোয়া না করে, শুধু পাঠকের কথা চিন্তা করে প্রকাশ করেছে নিত্যনতুন সব আইডিয়া কিংবা প্যারোডি। পাঠকও ভালোবেসে গ্রহণ করেছে সব। আশা করি, আগামী বছর পাঠকের এই ভালোবাসা অব্যাহত থাকবে এনটিভি তথা হাস্যরসের প্রতি। তা ছাড়া আমরা তো আছি আপনাদের আনন্দে রাখতে। আশা করি, আমাদের সকলের সহযোগিতা এবং ভালোবাসায় অ্যালেক্সা র্যাংকিংয়ের তিন নম্বর থেকে এক নম্বরে যাবে এনটিভি অনলাইন। নতুন বছরের জন্য সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আশা করি, আগামী বছর আপনাদের অনেক আনন্দে যাবে।
লেখক : রম্য লেখক ও স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান।