কেমন গেল শিক্ষার্থী, ফেসবুকার এবং শিক্ষকের বছর

Looks like you've blocked notifications!

শেষের পথে আরেকটি বছর। এই বছরটায় অনেকেই অনেক কিছু করবেন ভেবে রেখেছিলেন, আসলেই কি সেগুলো করতে পেরেছেন? কীভাবে গেল তাদের বছর?

*শিক্ষার্থী

বছরের শুরুতে তিনি মনে মনে পণ করেছিলেন, এই বছর পড়তে পড়তে উল্টাইয়া ফেলব। কোনো অবস্থাতেই সেমিস্টার ড্রপ দেব না।

বছর শেষে দেখা যাচ্ছে, ঠিকমতো পড়া হয়নি, এমন অজুহাতে তিনি একটি সেমিস্টার ড্রপ দিয়েছেন।

*ফেসবুকার

তিনি বছরের শুরুর দিকে ঠিক করেছিলেন, এই বছর ফেসবুকে সময় কম দেবেন। কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করবেন। ফেসবুক সেলিব্রিটি তাঁর না হলেও চলবে।

তবে বছরের শেষভাগে এসে তিনি দেখতে পাচ্ছেন, এই বছর ফেসবুক নিয়ে ব্যাপক মাতামাতি করেছেন তিনি। বছরের ৩৬৫ দিনে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ৬৪৮টি, ছবি পোস্ট করেছেন ২২১টি। ফেসবুক সেলিব্রিটি হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা করে গেছেন তিনি।

*জনৈক শিক্ষক

তিনি একজন ‘যত্নসহকারে প্রাইভেট পড়ানোওয়ালা’ শিক্ষক। এ বছরের শুরুতে তিনি পণ করেছিলেন, এবার আর প্রাইভেট পড়ানো নয়, ক্লাসে পড়ানোতেই বেশি মনোযোগী হবেন।

কিন্তু হিসাব করে তিনি এখন দেখতে পাচ্ছেন, শেষ হওয়া এই বছরটাতে আগের বছরের চেয়ে ৩৩ জন বেশি শিক্ষার্থীকে তিনি প্রাইভেট পড়িয়েছেন।

*জনৈক ঘুষখোর

‘না দিলে ঘুষ, ফাইল নড়ানোতে থাকবে না হুঁশ’ এই হচ্ছে তাঁর নীতিমালা। তবে বছরের শুরুতে তিনি কিছুটা ভালো হয়ে চলার পণ করেছিলেন।

অথচ বছর শেষে ‘প্রাপ্তি’র হিসাব মেলাতে গিয়ে তিনি দেখতে পাচ্ছেন, বেতনের চেয়ে ঘুষ থেকেই তাঁর ‘আয়’ বেশি। এ ছাড়া ঘুষ না দেওয়ায় ১৮টি ফাইল তিনি আটকে রেখেছিলেন।

*গৃহকর্ত্রী

গৃহকর্তা তথা স্বামীর দিকে চেয়ে এই বছরটাতে তিন-চারটির বেশি শাড়ি, চার-পাঁচটির বেশি ড্রেস কিনবেন না বলে মনস্থির করেছিলেন।

বছর শেষে দেখা যাচ্ছে, তিনি শাড়ি কিনেছেন ১১টি, ড্রেস কিনেছেন ১৩টি। এ ছাড়া শপিংয়ে নিয়ে না যাওয়ায় বছরের দুই দফা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিনি বাবার বাসায় চলে গিয়েছিলেন।

*আমজনতা

ভেবেছিলেন বছরটাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমবে, বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়বে না, কর্তাব্যক্তিরা জনতার কথা বেশি করে ভাববেন এবং বছরটা সুখে-শান্তিতে যাবে।

কিন্তু সারা বছরই বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম, বেড়েছে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম, জীবন থেকে ‘শান্তির মা’-ই যেন বিদায় নিয়েছে।

*জনৈক ডাক্তার

অযথা টেস্ট দিয়ে নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (যেখান থেকে তিনি কমিশন পান) রোগীদের পাঠানোর ক্ষেত্রে সংযমী হওয়ার পণ করেছিলেন তিনি।

কিন্তু তিনি এমন সংযম দেখিয়েছেন যে, শেষ হওয়া বছরে হাজারখানেক রোগীকে অপ্রয়োজনীয় অগুনতি টেস্ট দিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়েছিলেন তিনি।