রম্য
ইলিশের অপ্রকাশিত কথামালা
বৈশাখ এলেই ইলিশের গুরুত্ব কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কিন্তু ইলিশের মনের কথা জানার কেউ থাকে না। যার কেউ নাই, তার হাস্যরস আছে। ইলিশের মনের অপ্রকাশিত কথামালা জানাচ্ছেন হাস্যরস প্রতিবেদক।
‘‘আমি ইলিশ। ইলিশ মানে ঝাটকা-বাটকা নয়, একেবারে পরিপূর্ণ ইলিশ। আমাদের সমাজে আমার একটি নাম আছে। সেটি হচ্ছে ‘ইলশা খান’। আমার প্রেমিকার নাম হচ্ছে ‘ইলিশিন কাপুর’। নামের সঙ্গে খান আর কাপুর দেখে অনেকের হয়তো চক্ষু চড়কগাছ। আসলে হয়েছে কী, আমি হলাম বলিউডের সালমান, আমির, শাহরুখ প্রমুখ খান সাহেবের ডাই হার্ড ফ্যান। অন্যদিকে আমার উনি শ্রদ্ধা কাপুর, কারিনা কাপুর প্রমুখ কাপুরের ভক্ত। তাই আমরা আমাদের নামের শেষে খান আর কাপুর যোগ করে নিয়েছি।
যাই হোক, বৈশাখ এসে গেছে। মনুষ্য সমাজে ব্যাপক তোড়জোড় টের পাচ্ছি আমরা। আমরা ভেবে পাই না, সারা বছর যায়, মানুষ ইলিশের বিষয়ে নাক গলায় না। অথচ বৈশাখ এলেই তারা যেন ঘুম থেকে জেগে ওঠে। বৈশাখে মানুষ ব্যাপক আনন্দ নিয়ে ভাতের সঙ্গে ইলিশ খায়। এই ঐতিহ্য, এই সংস্কৃতি কোথায় পেল তারা? বাঙালি সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের ইলিশরাজ্যে যেসব ইতিহাসগ্রন্থ আছে, সেগুলোতে তো বৈশাখে ইলিশ খেতে হবে, এ রকম কিছু আমরা পাইনি। বৈশাখের সঙ্গে ইলিশের কোনো সম্পর্ক আছে বলেও শুনিনি। তাহলে মানুষ কেন অবিবেচকের মতো আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মানুষের তৎপরতায় আমরা শঙ্কিত, ভীত। তাদের জন্য আমরা রাত-বিরাতে ঘরে থাকতে পারছি না। হুলিয়া মাথায় আসামি যেভাবে পালিয়ে বেড়ায়, আমরাও সেভাবে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। ইলিশ সাম্রাজ্যে মানুষের হানা গণতন্ত্রের জন্য বৈরী সংকেত। মানুষের এই অপতৎপরতাকে আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বৈশাখ উদযাপনে খামাখা ইলিশকে টেনে আনবেন না। এতে একদিকে ইলিশের ব্যাপক ক্ষতি হয়, অন্যদিকে প্রতিযোগিতা করে ইলিশ কিনতে গিয়ে বেশি খরচ হয় মানুষের। সুতরাং নিজেকে বদলান, ইলিশকে বাঁচান।
ইতি
ইলশা মিয়া ওরফে ইলশা খান।’’