রম্য
ফুটবলের এই সাক্ষাৎকার না পড়লে জীবন বৃথা
ফুটবল বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় তারকা ফুটবল হলেও সবাই এত দিন মেতে ছিল খেলোয়াড়, রেফারি, কোচ আর কাপ নিয়েই। ফুটবলেরও যে থাকতে পারে হাসি, কান্না ও অনেক মজার স্মৃতি, এটা নিয়ে কেউই ভাবতে চান না। আর তাই আমরা এখন এসেছি ফুটবলের সাক্ষাৎকার নিতে।
প্রশ্ন : কেমন আছেন?
ফুটবল : আর থাকা। ভালো নাইরে ভাই।
প্রশ্ন : কেন, কী হয়েছে?
ফুটবল : মাঠে ২২ জনে মিলে লাত্থি-উষ্টা মারলে কি ভালো থাকার কথা?
প্রশ্ন : আচ্ছা বুঝলাম। তা সবাই কি আপনাকে মারে? কেউ আদর-সোহাগ করে না?
ফুটবল : হুম করে। গোলকিপার মাঝেমধ্যে বুকে জড়ায় ধরে। তখন কি যে শান্তি লাগেরে ভাই... কলিজা পুরাই শীতল হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে তো আবেগে কেঁদেও ফেলি...
প্রশ্ন : বাহ! আপনার আবার আবেগও আছে নাকি?
ফুটবল : ক্যান থাকব না? ফুটবল বইল্যা আমরা কি আর মানুষ না?
প্রশ্ন : হা হা। এই জোকসটা ভালো ছিল। আচ্ছা বলেন তো মাঠের বাইরে আপনার কাকে বেশি ভালো লাগে?
ফুটবল : রবীন্দ্রনাথকে।
প্রশ্ন : কেন জানতে পারি?
ফুটবল : উনিই একমাত্র কবি, যিনি ফুটবল ভালোবাসতেন।
প্রশ্ন : এটা আপনি কীভাবে বুঝলেন?
ফুটবল : কীভাবে আবার, উনার কবিতা পড়ে। উনি কবিতায় লিখছেন, দাও দাও মোরে ‘বল’ দাও...
প্রশ্ন : আর কার কার কবিতা আপনি পড়েছেন?
ফুটবল : ইয়ে... তেমন কারোরই না। তবে সুফিয়া কামালের একটা কবিতা এক লাইন পড়ে আর কোনো কবিতাই পড়তে ইচ্ছে করেনি।
প্রশ্ন : কেন, উনি কী এমন লিখেছিলেন?
ফুটবল : লিখেছিলেন, গোল করো না... গোল করো না... আচ্ছা আপনিই বলেন গোলই যদি না করে তবে খেলা হবে কী করে?
প্রশ্ন : অল্পবিদ্যা যে ভয়ংকরী তা আপনাকে দেখলেই বোঝা যায়। আচ্ছা এবার বলেন, ২২ জন খেলোয়াড় মিলে যখন এক আপনার পেছনে দৌড়ায়, তখন কেমন ফিল করেন?
ফুটবল : মহল্লার সেই সুন্দরীর মতো, যার পেছনে ছেলেদের লাইন লেগেই থাকে।
প্রশ্ন : কর্তৃপক্ষের কাছে আপনার কোনো চাওয়া-পাওয়া আছে কি?
ফুটবল : অবশ্যই আছে। তারা যেন ২২ জনের জন্য ২২টা বল দিয়ে মাঠে খেলতে পাঠায়। তাহলে সবাই আর একটা বলের জন্য কাড়াকাড়ি করবে না!
প্রশ্ন : সাক্ষাৎকার প্রায় শেষের দিকে। পাঠকদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?
ফুটবল : ফুটবল নিয়ে দলাদলি না করে আপনারা সবাই এক থাকবেন। কারণ জানেনই তো যে, একতাই ‘আমি’ অর্থাৎ ‘বল’ আর কী!