রম্য
এই সময়ে ‘সেলিব্রেটি’ হতে চাইলে
একসময় মানুষের ইতিবাচক, মহৎ কর্মই তাকে সেলিব্রেটি বা তারকাখ্যাতি এনে দিত। বর্তমানে ‘সেলিব্রেটি’র সংজ্ঞা খানিকটা পাল্টে গেছে। এই সময়ে সেলিব্রেটি হতে হলে যা প্রয়োজন, তা জানাচ্ছেন হাস্যরস প্রতিবেদক।
১. আপনার ফেসবুক আইডি থাকতে হবে। সেই আইডিতে কোনো পোস্ট দেওয়ার পর ‘লাইক’ পড়তে হবে এক-দুই হাজার, কমেন্ট পড়বে কমপক্ষে শখানেক, সেই পোস্ট ‘শেয়ার’ হতে হবে বেশ কয়েকজনের ওয়ালে।
২. ইউটিউবে আপনার একটি নিজস্ব চ্যানেল থাকবে। সেই চ্যানেলে হাবিজাবি যে ভিডিওই আপলোড করেন না কেন, তাতে লাখো ‘ভিউ’ হতে হবে। এই যে ভিউ হয়, তা নিয়ে আপনি আবার ফেসবুকে পোস্ট দেবেন। সে পোস্টে লাইক-কমেন্ট পড়বে স্রোতের মতো। কিছু কমেন্ট হবে এ রকম, ‘আপনি একখান জিনিস, ভাই!’ ‘অসাম ভাই, অসাম!’ ইত্যাদি ইত্যাদি।
৩. মাঝেমধ্যেই তরুণদের নানা সমস্যা নিয়ে ‘জ্ঞানগর্ভ’ আলোচনা করে মোটিভেশনাল ভিডিও তৈরি করতে হবে। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে হাজার হাজার ভিউ পেতে হবে। এর মধ্য দিয়ে মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে তারকাখ্যাতি কুড়াবেন।
৪. প্রেম করতে হবে। অত্যাধুনিক প্রেম! প্রেমিকার সঙ্গে কখন কী করেন, কোথায় যান, কোথায় ঘোরেন সব ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে হবে। মধ্যরাতে প্রেমিক/প্রেমিকার বাসার গেটে ধাক্কাধাক্কি করতে হবে! এরপর আপনার ‘সেলিব্রেটি’ হওয়া কেউ ঠেকাতে পারবে না!
৫. বাংলা, ইংলিশ, হিন্দি সব ভাষা মিলিয়ে ‘বাংলিশহি’ নামক জগাখিচুড়িমার্কা ভাষায় বই লিখতে হবে! সেই বই হবে ‘বেস্টসেলার’, আপনি হবেন তারকা!
৬. সব সেলিব্রেটিকে সবাই পছন্দ করেন না। প্রত্যেক সেলিব্রেটির একটি অ্যান্টি গ্রুপ থাকে। আপনাকে এই অ্যান্টি গ্রুপকে টার্গেট করতে হবে। এ জন্য এরা যে সেলিব্রেটিকে পছন্দ করে না, সেই সেলিব্রেটির বিপক্ষে ফেসবুকে উল্টাপাল্টা লিখতে হবে। তাহলেই ওই অ্যান্টি গ্রুপের ব্যাপক সমর্থনে আপনিও নব্য সেলিব্রেটি হয়ে উঠতে পারবেন।