বিখ্যাতদের মজার ঘটনা
অশ্বিনী দত্তের বাড়ি ‘পাগলের আড্ডাখানা’!
অশ্বিনীকুমার দত্ত
স্বদেশি আন্দোলনের নেতা অশ্বিনীকুমার দত্তের বাড়ি সবার জন্যই উন্মুক্ত ছিল। সাধু-সন্ন্যাসী থেকে শুরু করে পাগল, ভবঘুরে সবাই সেখানে সমান। বাড়ি তো নয় যেন অশ্বিনী দত্তের হোটেল!
একদিন সাতসকালে সন্ন্যাসীর মুখে নামকীর্তন শুনে এক পাগল হঠাৎ ক্ষেপে উঠল, এ তো দেখছি পাগলের আড্ডাখানা! কথাটি সন্ন্যাসীর কানে যেতেই তিনি সোজা অশ্বিনীকুমারের কাছে গিয়ে অনুযোগ করে বললেন, পাগল-ভবঘুরেদের কি এ বাড়িতে স্থান না দিলেই নয়?
অশ্বিনীকুমার হেসে উত্তর দিলেন- শুনেছেন তো লোকে আমার বাড়িকে কী বলে! সবাইকে স্থান না দিলে বাড়িটা যথার্থ চিড়িয়াখানা হয়ে উঠবে কী করে?
অস্কার ওয়াইল্ড
ভিক্টোরিয়ান যুগের বিখ্যাত কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার অস্কার ওয়াইল্ডের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা ছড়ানোর দায়ে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায়ের পর- হাতকড়া পরা অবস্থায় ওয়াইল্ড পুলিশের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রিজন ভ্যানের জন্য অপেক্ষা করছেন। এমন সময় ঝেঁপে বৃষ্টি নামল। অসহায়ভাবে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে তিনি বললেন, ‘কয়েদিদের প্রতি রানির আচরণ যদি এমনই হয়, তবে আমি নিশ্চিত যে ভবিষ্যতে তাঁর ভাগ্যে আর কোনো কয়েদিই জুটবে না।’
একবার অস্কার ওয়াইল্ডের একটি বিখ্যাত নাটকের কিছু জায়গায় নির্দেশক পরিবর্তনের কথা বললেন। কিন্তু জবাবে অস্কার কিছু বলছেন না দেখে নির্দেশক পুনরায় জানতে চাইলেন, আপনার কি তাতে আপত্তি আছে?
অস্কার এবার সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, না, না, আপত্তি থাকবে কেন? কিন্তু সমস্যা হলো, কোনো মাস্টারপিসের ওপর আমি হাত দেই কীভাবে বলুন?
অস্কারকে নিয়ে আরেকটি ঘটনা। ব্রিটিশ রাজ-কবি লর্ড টেনিসন মারা গেছেন। তাঁর প্রধান শিষ্য কবি স্যার নিউইস মরিস ভাবলেন, তাকে নিশ্চয়ই এবার রাজকবি করা হবে। কিন্তু সে বিষয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করছে না দেখে বেচারা একদিন মওকা পেয়ে ওয়াইল্ডের কাছে অভিযোগ করে বললেন, সব ষড়যন্ত্র! ওরা সবাই চুপচাপ থেকে আমার বিরুদ্ধে জট পাকাচ্ছে। এ অন্যায় আমি মেনে নেব না। বলুন তো, এখন কী করা যায়?
ওয়াইল্ড তাঁকে আশ্বস্ত করে বললেন, মশাই, অত চিন্তা করছেন কেন? আপনিও ওদের ষড়যন্ত্রে যোগ দিন, দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে।