কাঁচাবাজারও বিশ্রামে, ৮৫ দোকানে ১০ ক্রেতা
ভীষণ ব্যস্ত রাজধানীর কারওয়ান বাজার আজ শুক্রবার ছিল বিশ্রামে। বাজারের ভেতর খুচরা সবজি বিক্রেতারা মুখোমুখি বসে অপর বিক্রেতার সঙ্গে গল্পে মেতে ওঠেন। কেউবা বিশ্রাম নেন। কারণ, ক্রেতা একেবারেই কম। বাজারে দোকান গুনে দেখা যায়, ৮৫ জন সবজি বিক্রেতার মধ্যে ৭৫টি দোকানের সামনেই কোনো ক্রেতা ছিল না।
আজ শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজারের খুচরা কাঁচাবাজারে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দেখা যায়, ক্রেতারা কাঁচা সবজি নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু ক্রেতা নেই। ক্রেতা না থাকায় বিক্রেতারা অবসর সময় পার করছেন। এই যখন পরিস্থিতি তখন কারো কারো মুখে হতাশার ছাপ দেখা যায়।
কারওয়ান বাজার ব্যবসায়ী সমিতির দ্বিতীয় মার্কেটের পাশ থেকে কামারপট্টি পর্যন্ত রাস্তায় ওপরেই ৬০টি সবজির দোকান আছে। কিন্তু ক্রেতা ছিলেন মাত্র সাতজন। পুরো বাজারের দোকানেই একই অবস্থা। বিক্রেতাদের একজন সাগর হোসেন। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বেচা-কেনা নেই। কার কাছে বেচমু? কেউ তো বাসা থেকে বের হতে পাচ্ছে না। ৩০ মিনিট আগে একটা লাউ বিক্রি করছি ২০ টাকায়। এই লাউ পরশু বিক্রি করেছি ৪০ টাকায়। কম দামে হলেও সব বেচে ঘরে ফিরতে হবে। আমার মতো সব দোকানেই সমান অবস্থা।’
সাগরের পেছনে থাকা নাসিরন বিবি ব্যারিকেড দেওয়া দেয়ালে শরীর মেলে বসে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সকালে যেভাবে মাল কিনছি সেভাবেই পড়ে আছে। বিক্রি না হলে সব লস। কাল থেকে আর কিনব না।’
রাস্তা থেকে কাঁচাবাজার ছাউনির ভেতরে গিয়ে দেখা, দুই সারিতে দোকান আছে ২৫টি। এই ২৫টি দোকানে শহিদুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতাকে দেখা যায় সবজি কিনতে। সে সময় বিক্রেতা মো. আসানুল্লাহ বলেন, ‘এক ঘণ্টায় একজনও আসেনি কিনতে। সকাল থেকে ৩২৫ টাকা বিক্রি করছি। সকালের দিকেই কয়েকজন কিনেছিল। এখন আর কেউ নেই। কালকের মাল এখনো বিক্রি করতে পারিনি। আজ নতুন করে কিছুই কিনিনি।’
ক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাসায় তরি-তরকারি ফুরিয়ে গেছে। তাই এলাম কিনতে। আজ সব জিনিসের দাম কম। ক্রেতা নেই বলে মনে হয় এই অবস্থা। আজ অনেক কিছু কিনে নিয়ে যাব বাসায়।’
ছাউনির ভেতরের আরেক বিক্রেতা মাসুম আলী বলেন, ‘১০ বছর ধরে এইখানে ব্যবসা করি। কিন্তু কোনোদিন এমন অবস্থা দেখিনি। ইচ্ছে করলে এখন দোকানে বসেই ঘুমানো যাবে। লোকজন নেই বলে সবকিছুর দামও কম। ভাবেন একবার, গত বুধবার বেগুন বিক্রি করেছি ৬০ টাকা। আজ বিক্রি করছি ৩০ টাকা। বুধবারের ৬০ টাকার পটল আজ ৪০ টাকা। ৮০ টাকার করলা বিক্রি করছি ৫০ টাকা। ৬০ টাকার গাজর বিক্রি করছি ২০ টাকা। ৩০ টাকার টমেটো ২০ টাকা। ৮০ টাকার বরবটি বিক্রি করছি ২০ টাকা কেজিপ্রতি।’