২০২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.১০ শতাংশ, মাথাপিছু আয় ২,৭৯৩ মার্কিন ডলার
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা কাটিয়ে গত অর্থবছরে (২০২২ অর্থবছর) দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২১ অর্থবছরে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০২০ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৯ অর্থবছরে দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
গতকাল রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জারি করা সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২ অর্থবছরে দেশে মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৭৯৩ মার্কিন ডলার, যা ২০২১ অর্থবছরে রেকর্ড দুই হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলার থেকে বেড়েছে। ২০২০ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল দুই হাজার ৩২৬ মার্কিন ডলার। যা ২০১৯ অর্থবছরে ছিল দুই হাজার ২০৯।
বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ২০২২ অর্থবছরে স্থিতমূল্যে বাংলাদেশের জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে তিন কোটি তিন লাখ ৫১ হাজার ৪৯৬ মিলিয়ন টাকায়, যা ২০২১ অর্থবছরে ছিল দুই কোটি ৮৩ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৪ মিলিয়ন টাকা।
স্থিতমূল্যে জিডিপির খাতে শেয়ার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সেবা খাত এখনও ৫১ দশমিক ৪৮ শতাংশ, শিল্প খাত ৩৬ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং কৃষি খাত ১১ দশমিক ৬১ শতাংশ নিয়ে সিংহভাগ ভোগ করছে।
যদি স্থিতমূল্যে জিডিপির খাতগত প্রবৃদ্ধির হার বিবেচনা করা হয়, তবে শিল্প খাত গত অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশর বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরে সেবা খাতে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং কৃষি খাতে ৩ দশমিক ০৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বিবিএসের পরিসংখ্যান আরও দেখিয়েছে, গত অর্থবছরে জিডিপিতে বিনিয়োগের অনুপাত বেড়েছে ৩২ দশমিক ০৫ শতাংশে, যা ২০২১ অর্থবছরে ছিল ৩১ দশমিক ০২ শতাংশ । এর মধ্যে জিডিপিতে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুপাত বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং সরকারি বিনিয়োগের অনুপাতও গত অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গতকাল রোববার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার খুবই ভালো। বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এটি অসামান্য। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের অবস্থা বেশ ভালো ছিল। বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থার মধ্যে পরিসংখ্যান দেখে আমি অবাক হইনি। এই ধরনের পারফরম্যান্সের পেছনে অভ্যন্তরীণ শক্তি তার যথাযথ ভূমিকা পালন করেছে।’
মান্নান আরও উল্লেখ করেন, ‘অভ্যন্তরীণ এবং বিদেশে শক্তিশালী শ্রমশক্তি অর্থনীতিকে একটি শক্ত ভিত্তি দিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন সহযোগীদের নিম্নমুখী পূর্বাভাস সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরে এবং আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে বর্তমান গতি বজায় থাকবে।’