বাজেট
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতেই জোর
প্রস্তাবিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ওপর জোর দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেট বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন : ২০১৫ সালের পর কয়লাকে মূল জ্বালানি হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাজেট বক্তৃতায় আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, সম্ভাব্য এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো- রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানি (Bangladesh-India Friendship Power Company) গঠন, মাতারবাড়ি এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সাথে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর; চীন, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের আর্থিক সহায়তায় মহেশখালীতে প্রতিটি এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট হিসেবে চার হাজার ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি এবং পটুয়াখালীর পায়রায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। একইসাথে সরকারি ও বেসরকারি খাতে এক হাজার ৪১১ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্যও চুক্তি সই করা হয়েছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ১৮ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এটি মোট বাজেটের ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এবারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) মোট বরাদ্দের ১৯ দশমিক ১ শতাংশ থাকছে বিদ্যুৎ খাতে।
বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, সরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাতকে আগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন, পুরাতন কেন্দ্রগুলোর সংস্কার, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পর্যায়ক্রমে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আওতায় বিদ্যুৎ আমদানি, জ্বালানি উৎস বহুমুখীকরণ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে।
‘২০০৯-১৪ মেয়াদের পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বেড়েছে তিন গুণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২০০৯ সালের চার হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট হতে বর্তমানে ১৩ হাজার ৬৭৫ মেগাওয়াটে (ক্যাপ্টিভ দুই হাজার মেগাওয়াট এবং সোলার ১৭৫ মেগাওয়াটসহ) উন্নীত হয়েছে। জানুয়ারি ২০০৯ হতে মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত সময়ে অতিরিক্ত ছয় হাজার ৩২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি সরকার সচেষ্ট আছে প্রকৃত উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে। উৎপাদন সক্ষমতার অন্তত ৮০ শতাংশ ২০১৮ সালের মধ্যে সরবরাহ করা সরকারের লক্ষ্য।’